ঢাকা ১২:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জয় বাংলা ক্লাবের সভাপতি এখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক!

নিউজ রুম
  • আপডেটের সময় : ০৭:৩৩:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৮৪০

বিশেষ প্রতিবেদকঃ দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ থাকা আ.লীগের দোসর কুয়াকাটার রাকিব মুসুল্লি এবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক পদে জায়গা করে নিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

রাকিব মুসুল্লি ১১৪, পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী-কুয়াকাটা) আসনের আওয়ামী লীগের পতিত সংসদ সদস্য ও দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী অধ্যক্ষ মহিবুর রহমানের সহধর্মিণী ও কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ফাতেমা আক্তার রেখার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে তিনি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিনি মহিপুর থানা শাখার ‘জয় বাংলা ক্লাব’র সভাপতি থাকাকালীন দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি এবং কাউন্টার দখলের মতো নানা কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলেন। এছাড়া ‘ফেয়ার মাইন্ড সমাজসেবা সংগঠন’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পরিচালনা করতেন, যা চাঁদাবাজির কাজে ব্যবহৃত হতো বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে এই সংগঠনের নামে অর্থ দিতে বাধ্য করা হতো, না দিলে তাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হতো।

দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের পর, অন্যান্য বিতর্কিত নেতাদের মতো তিনিও আত্মগোপনে চলে যান। ৫ তারিখের পর তিনি এলাকা ছাড়েন এবং পরে ঢাকার সাভারে আশ্রয় নেন। সেখানে গিয়ে তিনি ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র সঙ্গে সংযুক্ত হন এবং আশ্চর্যজনকভাবে সংগঠনটির সাভার উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পদ পেয়ে যান। বিষয়টি জানাজানি হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তাদের প্রশ্ন—একজন দখলদার ও চাঁদাবাজ কীভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে পারেন? সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। অনেকেই এটিকে সংগঠনের বড় ব্যর্থতা বলে উল্লেখ করছেন এবং আদর্শবিরোধী বলে দাবি করছেন।

এ বিষয়ে রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সমন্বয়ক ও সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বৃহত্তর উত্তরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আবু সালেহ অমি বলেন, ‘আমরা যারা জুলাই আন্দোলনে ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়েছি, তাদের পক্ষে এই সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিকে ৩৬ ঘণ্টার সময়সীমা দিয়েছি—এর মধ্যে তাকে কমিটি থেকে বাদ দিতে হবে, অন্যথায় আমরা কঠোর কর্মসূচিতে যাবো।’

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। যদি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে তাকে কমিটি থেকে অপসারণ করা হবে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তবে সাভার উপজেলা কমিটির দায়িত্বশীলরা এখনও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। সাধারণ শিক্ষার্থীরা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এবং সংগঠনের নীতি-নৈতিকতার প্রশ্ন তুলেছেন।



নিউজটি শেয়ার করুন








জয় বাংলা ক্লাবের সভাপতি এখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক!

আপডেটের সময় : ০৭:৩৩:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বিশেষ প্রতিবেদকঃ দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ থাকা আ.লীগের দোসর কুয়াকাটার রাকিব মুসুল্লি এবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক পদে জায়গা করে নিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

রাকিব মুসুল্লি ১১৪, পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী-কুয়াকাটা) আসনের আওয়ামী লীগের পতিত সংসদ সদস্য ও দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী অধ্যক্ষ মহিবুর রহমানের সহধর্মিণী ও কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ফাতেমা আক্তার রেখার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে তিনি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিনি মহিপুর থানা শাখার ‘জয় বাংলা ক্লাব’র সভাপতি থাকাকালীন দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি এবং কাউন্টার দখলের মতো নানা কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলেন। এছাড়া ‘ফেয়ার মাইন্ড সমাজসেবা সংগঠন’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পরিচালনা করতেন, যা চাঁদাবাজির কাজে ব্যবহৃত হতো বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে এই সংগঠনের নামে অর্থ দিতে বাধ্য করা হতো, না দিলে তাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হতো।

দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের পর, অন্যান্য বিতর্কিত নেতাদের মতো তিনিও আত্মগোপনে চলে যান। ৫ তারিখের পর তিনি এলাকা ছাড়েন এবং পরে ঢাকার সাভারে আশ্রয় নেন। সেখানে গিয়ে তিনি ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র সঙ্গে সংযুক্ত হন এবং আশ্চর্যজনকভাবে সংগঠনটির সাভার উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পদ পেয়ে যান। বিষয়টি জানাজানি হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তাদের প্রশ্ন—একজন দখলদার ও চাঁদাবাজ কীভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে পারেন? সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। অনেকেই এটিকে সংগঠনের বড় ব্যর্থতা বলে উল্লেখ করছেন এবং আদর্শবিরোধী বলে দাবি করছেন।

এ বিষয়ে রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সমন্বয়ক ও সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বৃহত্তর উত্তরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আবু সালেহ অমি বলেন, ‘আমরা যারা জুলাই আন্দোলনে ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়েছি, তাদের পক্ষে এই সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিকে ৩৬ ঘণ্টার সময়সীমা দিয়েছি—এর মধ্যে তাকে কমিটি থেকে বাদ দিতে হবে, অন্যথায় আমরা কঠোর কর্মসূচিতে যাবো।’

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। যদি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে তাকে কমিটি থেকে অপসারণ করা হবে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তবে সাভার উপজেলা কমিটির দায়িত্বশীলরা এখনও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। সাধারণ শিক্ষার্থীরা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এবং সংগঠনের নীতি-নৈতিকতার প্রশ্ন তুলেছেন।