ঢাকা ০৪:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মহিপুরে ডেঙ্গুতে দুই নারীর মৃত্যু, আক্রান্ত অর্ধশতাধিক

নিউজ রুম
  • আপডেটের সময় : ০৬:০০:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
  • / ৬৪৮

মহিপুর (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর মহিপুরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দুই নারী মারা গেছেন। এদের মধ্যে একজন অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন এবং মৃত্যুর দুই দিন আগে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। বর্তমানে নবজাতকটি ঢাকার একটি হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এ ছাড়া মহিপুর ও আশপাশের এলাকায় অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লতাচাপলী ইউনিয়নের সুমাইয়া (২৫) নামের ওই নারী কয়েক দিন আগে জ্বরে আক্রান্ত হন। প্রথমে পরিবার জ্বরটিকে সাধারণ জ্বর ভেবে অবহেলা করলেও পরে পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ে। অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং সংকটাপন্ন অবস্থায় সিজারিয়ান করে সন্তান প্রসব করানো হয়। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত রোববার রাতে তার মৃত্যু হয়।

অন্যদিকে মহিপুর সদর ইউনিয়নের নজিবপুর গ্রামের সাফিয়া বেগম (৩০) নামের আরেক নারী বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

এলাকার বাসিন্দা মিজান হাওলাদার বলেন, ‘কুয়াকাটা ২০ শয্যা হাসপাতাল কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। কোনো এমবিবিএস ডাক্তার নেই। এলাকায় ডেঙ্গু দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, কিন্তু যথাযথ চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।’

আরেক বাসিন্দা মো. হাসান বলেন, ‘প্রতিদিন মানুষ জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা চেষ্টা করছেন, কিন্তু ডাক্তারের অভাবে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে।’

কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, ‘পুরো উপজেলার মধ্যে মহিপুর এলাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। কুয়াকাটা ২০ শয্যা হাসপাতালে একজন এমবিবিএস ডাক্তার পদায়নের প্রক্রিয়া চলছে, তিনি ১-২ দিনের মধ্যেই যোগ দেবেন।’

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউছার হামিদ বলেন, ‘এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। মশার লার্ভা ধ্বংসে ফগার মেশিন দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় স্প্রে করা হবে। কুয়াকাটা হাসপাতালে ডাক্তারের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

এদিকে মহিপুর ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বরিশালের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। স্থানীয়দের আশঙ্কা, দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এলাকায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে।



নিউজটি শেয়ার করুন








মহিপুরে ডেঙ্গুতে দুই নারীর মৃত্যু, আক্রান্ত অর্ধশতাধিক

আপডেটের সময় : ০৬:০০:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

মহিপুর (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর মহিপুরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দুই নারী মারা গেছেন। এদের মধ্যে একজন অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন এবং মৃত্যুর দুই দিন আগে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। বর্তমানে নবজাতকটি ঢাকার একটি হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এ ছাড়া মহিপুর ও আশপাশের এলাকায় অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লতাচাপলী ইউনিয়নের সুমাইয়া (২৫) নামের ওই নারী কয়েক দিন আগে জ্বরে আক্রান্ত হন। প্রথমে পরিবার জ্বরটিকে সাধারণ জ্বর ভেবে অবহেলা করলেও পরে পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ে। অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং সংকটাপন্ন অবস্থায় সিজারিয়ান করে সন্তান প্রসব করানো হয়। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত রোববার রাতে তার মৃত্যু হয়।

অন্যদিকে মহিপুর সদর ইউনিয়নের নজিবপুর গ্রামের সাফিয়া বেগম (৩০) নামের আরেক নারী বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

এলাকার বাসিন্দা মিজান হাওলাদার বলেন, ‘কুয়াকাটা ২০ শয্যা হাসপাতাল কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। কোনো এমবিবিএস ডাক্তার নেই। এলাকায় ডেঙ্গু দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, কিন্তু যথাযথ চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।’

আরেক বাসিন্দা মো. হাসান বলেন, ‘প্রতিদিন মানুষ জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা চেষ্টা করছেন, কিন্তু ডাক্তারের অভাবে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে।’

কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, ‘পুরো উপজেলার মধ্যে মহিপুর এলাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। কুয়াকাটা ২০ শয্যা হাসপাতালে একজন এমবিবিএস ডাক্তার পদায়নের প্রক্রিয়া চলছে, তিনি ১-২ দিনের মধ্যেই যোগ দেবেন।’

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউছার হামিদ বলেন, ‘এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। মশার লার্ভা ধ্বংসে ফগার মেশিন দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় স্প্রে করা হবে। কুয়াকাটা হাসপাতালে ডাক্তারের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

এদিকে মহিপুর ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বরিশালের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। স্থানীয়দের আশঙ্কা, দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এলাকায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে।