সিসামুক্ত ভবিষ্যৎ গড়তে কুয়াকাটায় র্যালি ও মানববন্ধন

- আপডেটের সময় : ০২:৪১:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
- / ৬১৬
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ “কোনো মাত্রাই নিরাপদ নয়, সিসা দূষণ বন্ধে এখনই সময়”— এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় সিসা দূষণ প্রতিরোধে র্যালি, মানববন্ধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১১টায় কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রি কলেজ প্রাঙ্গণে পরিবেশবাদী যুব সংগঠন ইয়ুথনেট গ্লোবাল-এর আয়োজনে, পিওর আর্থ বাংলাদেশ-এর সহায়তায় এবং ইউনিসেফ-এর সহযোগিতায় এ কর্মসূচি পালিত হয়।
কলেজ ক্যাম্পাস থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে সদর রোড প্রদক্ষিণ শেষে মানববন্ধনে মিলিত হয়। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও স্বেচ্ছাসেবী অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে ইয়ুথনেট গ্লোবালের পটুয়াখালী জেলা সমন্বয়ক মো. জাহিদুল ইসলাম সিসা দূষণ প্রতিরোধে দশ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে— সিসাকে ‘বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ’ ঘোষণা, জনগণের রক্তে সিসার মাত্রা নির্ণয়ে জাতীয় জরিপ, শিশু ও গর্ভবতী নারীদের সুরক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ, ভোগ্যপণ্যে সিসা ব্যবহারে কঠোর মানদণ্ড ও মনিটরিং জোরদার, অনিরাপদ ব্যাটারি রিসাইক্লিং কারখানা বন্ধ এবং আধুনিক পরীক্ষাগার স্থাপন।
মানববন্ধন শেষে কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন— কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মো. রাসেল রেজা, সিনিয়র শিক্ষক আব্দুল মতিন হাওলাদার, পিওর আর্থ বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মিতালী দাশ ও ইয়ুথনেট গ্লোবালের নির্বাহী সমন্বয়ক সোহানুর রহমান।
বক্তারা বলেন, সিসা একটি নীরব ঘাতক বিষ, যা শিশুদের মস্তিষ্ক, স্নায়ুতন্ত্র, কিডনি ও যকৃতের ক্ষতি করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিপন্ন করছে। সিসা শুধু ব্যাটারি বা রঙে নয়, এখন খেলনা, বাসনপত্র, প্রসাধনসামগ্রী ও মসলাতেও ব্যবহৃত হচ্ছে— যা মানুষের জীবনকে গভীর ঝুঁকিতে ফেলছে।
তারা আরও বলেন, সিসা দূষণ রোধে জাতীয় পর্যায়ে নীতি, গবেষণা ও সচেতনতা একসাথে প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়া তরুণ প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করেই সিসামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব। এখনই সমন্বিত উদ্যোগ না নিলে আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ঝুঁকির মুখে ফেলব।
তারা অবিলম্বে সিসাযুক্ত পণ্য ও অবৈধ রিসাইক্লিং কারখানার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে শিশুদের সুস্থ ভবিষ্যতের জন্য সিসামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সবাইকে আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইয়ুথনেটের স্বেচ্ছাসেবক মো. রাহাত, লিমা, মোমো, রেজাউল ইসলাম রবিন, মো. সাইফুল ইসলাম ইমন, মো. সাবিকসহ আরও অনেকে।
উল্লেখ্য, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-র তথ্যমতে, প্রতিবছর সিসা দূষণে প্রায় ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটে, যার বেশির ভাগই শিশু। ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে তিন কোটি শিশুর রক্তে বিপজ্জনক মাত্রায় সিসা পাওয়া গেছে, যা বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ সর্বোচ্চ।