ঢাকা ০৭:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পরিবেশ রক্ষায়

কলাপাতায় লবণ বিক্রি করে প্রশংসায় ভাসছেন শমসের আলী

নিউজ রুম
  • আপডেটের সময় : ১২:০৭:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
  • / ৭২৩

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতাঃ অন্তর্বর্তী সরকার পরিবেশ রক্ষার্থে পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও প্রশাসনের নজরদারি বা তৎপরতা না থাকার কারণে সরকারের এই আইনকে উপেক্ষা করে বিভিন্ন হাট-বাজারগুলোতে যখন ক্রেতা-বিক্রেতারা যত্রতত্র অবাধে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহার করে যাচ্ছে। ঠিক তখনই পলিথিন নিষিদ্ধে সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে পরিবেশ রক্ষার্থে নিজ উদ্যোগে কলাপাতায় লবণ বিক্রি করছেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শমসের আলী। এতে সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি।

শমসের আলী উপজেলার খড়িবাড়ি বাজারে দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে খুচরা লবণ ব্যবসা করে আসছেন। গত এক সপ্তাহ ধরে কলাপাতা দিয়ে মোড়ানো আধা কেজি, ১ কেজির লবণের প্যাকেট তৈরি করে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন তিনি। তার এই কলাপাতা মোড়ানো লবণের প্যাকেট ও দোকানের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট করেছেন। অনেকেই তার দোকানে প্রাচীন পদ্ধতির এই ব্যতিক্রম উদ্যোগ দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন। করছেন প্রশংসা।

পলিথিনের ব্যবহার কমাতে কলারপাতা সহজলভ্য, প্রাকৃতিকভাবে এটি পচনশীল এবং পরিবেশবান্ধব, যা পরিবেশ রক্ষা ও সচেতনতার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

কলাপাতায় লবণ কিনতে আসা আলিম উদ্দিন সলিমুদ্দিন ও এলাকাবাসী জাহিদুল হক ও শাহানুর মিয়া জানান, ২৫ থেকে ৩০ বছর আগে তারা বিভিন্ন পাতায় লবণ কিনতেন। কিন্তু ২০ বছর ধরে পলিথিনের প্যাকেটে লবণ কিনে আসছেন, হঠাৎ করে শমসের আলীর দোকানে কলাপাতায় মোড়ানো লবণ বিক্রির দৃশ্য দেখে তাদের খুব ভালো লাগছে। তাদের মনে হচ্ছে সেই পুরনো দিনে ফিরে গেছেন তারা।

কলাপাতায় খুচরা লবণ ব্যবসায়ী শমসের আলী বলেন, ‘দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে লবণের ব্যবসা করে আসছি। সরকারের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বাজারে কলাপাতা দিয়ে মোড়ানো ১ কেজি, আধা কেজি ওজনের লবণ পাতায় মুড়িয়ে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছি।’

পরিবেশ রক্ষায় পলিথিনের বিকল্প কলাপাতায় কোনো কোনো ক্রেতা অনাগ্রহ প্রকাশ করলেও কলাপাতা-পদ্মপাতাসহ প্রাকৃতিক পণ্যে লবণ বিক্রি করে যেতে চান বলে জানান তিনি।

প্রত্যন্ত অঞ্চলের এ ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ীর পলিথিন বর্জনকে স্বাগত জানিয়ে কাশিপুর ডিগ্রী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ হেল বাকী বলেন, ‘যদি শমসের আলীর মত গোটা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বিষাক্ত পলিথিন বর্জন  করেন তাহলেই আমাদের পরিবেশ তার স্বাভাবিকতা ফিরে পাবে। পরিবেশ রক্ষায় শমসের আলীর উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই।’



নিউজটি শেয়ার করুন








পরিবেশ রক্ষায়

কলাপাতায় লবণ বিক্রি করে প্রশংসায় ভাসছেন শমসের আলী

আপডেটের সময় : ১২:০৭:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতাঃ অন্তর্বর্তী সরকার পরিবেশ রক্ষার্থে পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও প্রশাসনের নজরদারি বা তৎপরতা না থাকার কারণে সরকারের এই আইনকে উপেক্ষা করে বিভিন্ন হাট-বাজারগুলোতে যখন ক্রেতা-বিক্রেতারা যত্রতত্র অবাধে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহার করে যাচ্ছে। ঠিক তখনই পলিথিন নিষিদ্ধে সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে পরিবেশ রক্ষার্থে নিজ উদ্যোগে কলাপাতায় লবণ বিক্রি করছেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শমসের আলী। এতে সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি।

শমসের আলী উপজেলার খড়িবাড়ি বাজারে দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে খুচরা লবণ ব্যবসা করে আসছেন। গত এক সপ্তাহ ধরে কলাপাতা দিয়ে মোড়ানো আধা কেজি, ১ কেজির লবণের প্যাকেট তৈরি করে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন তিনি। তার এই কলাপাতা মোড়ানো লবণের প্যাকেট ও দোকানের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট করেছেন। অনেকেই তার দোকানে প্রাচীন পদ্ধতির এই ব্যতিক্রম উদ্যোগ দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন। করছেন প্রশংসা।

পলিথিনের ব্যবহার কমাতে কলারপাতা সহজলভ্য, প্রাকৃতিকভাবে এটি পচনশীল এবং পরিবেশবান্ধব, যা পরিবেশ রক্ষা ও সচেতনতার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

কলাপাতায় লবণ কিনতে আসা আলিম উদ্দিন সলিমুদ্দিন ও এলাকাবাসী জাহিদুল হক ও শাহানুর মিয়া জানান, ২৫ থেকে ৩০ বছর আগে তারা বিভিন্ন পাতায় লবণ কিনতেন। কিন্তু ২০ বছর ধরে পলিথিনের প্যাকেটে লবণ কিনে আসছেন, হঠাৎ করে শমসের আলীর দোকানে কলাপাতায় মোড়ানো লবণ বিক্রির দৃশ্য দেখে তাদের খুব ভালো লাগছে। তাদের মনে হচ্ছে সেই পুরনো দিনে ফিরে গেছেন তারা।

কলাপাতায় খুচরা লবণ ব্যবসায়ী শমসের আলী বলেন, ‘দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে লবণের ব্যবসা করে আসছি। সরকারের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বাজারে কলাপাতা দিয়ে মোড়ানো ১ কেজি, আধা কেজি ওজনের লবণ পাতায় মুড়িয়ে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছি।’

পরিবেশ রক্ষায় পলিথিনের বিকল্প কলাপাতায় কোনো কোনো ক্রেতা অনাগ্রহ প্রকাশ করলেও কলাপাতা-পদ্মপাতাসহ প্রাকৃতিক পণ্যে লবণ বিক্রি করে যেতে চান বলে জানান তিনি।

প্রত্যন্ত অঞ্চলের এ ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ীর পলিথিন বর্জনকে স্বাগত জানিয়ে কাশিপুর ডিগ্রী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ হেল বাকী বলেন, ‘যদি শমসের আলীর মত গোটা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বিষাক্ত পলিথিন বর্জন  করেন তাহলেই আমাদের পরিবেশ তার স্বাভাবিকতা ফিরে পাবে। পরিবেশ রক্ষায় শমসের আলীর উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই।’