ঢাকা ১১:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নদী ভাঙনে দিশেহারা মানুষ, অর্ধশত বসতভিটা পায়রার গর্ভে বিলীন

ওবায়দুর রহমান অভি
  • আপডেটের সময় : ০৯:১১:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৬৬২

দুমকি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বাহেরচর এলাকায় অর্ধশত পরিবার ঘরবাড়ি সর্বগ্রাসী পায়রার অব্যাহত ভাঙনে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। চলতি মৌসুমে ঘরবাড়ি হারিয়েছে অর্ধশতাধিক পরিবার।

সরেজমিনে দেখা যায়, পশ্চিম আঙ্গারিয়া বাহেরচর এলাকার প্রায় ২কি.মি. এলাকাজুড়ে পায়রা নদীর অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গন কবলিত এলাকার লোকজন সরকারি রাস্তার পাশে, বিভিন্ন এলাকায় আত্মীয়-স্বজনের গোয়াল ঘর, পাঁকের ঘরে কোনো রকম মানবেতর জীবন যাপন করছে। আবার কিছু লোকজন পরিবার পরিজন নিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। দীর্ঘদিন যাবৎ পায়রা নদীর অব্যাহত ভাঙনে ইতিমধ্যে প্রায় আড়াই কি.মি. এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বলে জানান স্থানীয়রা। এসব এলাকায় ঘর বাড়ি, মসজিদ, মন্দির, রাস্তা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

স্থানীয় ভূক্তভোগী সুধান চন্দ্র মিস্ত্রী (৫০) ও সুধারঞ্জন চন্দ্র মিস্ত্রী (৮০) বলেন, আমাদের বাড়ি এখান থেকে ২থেকে ৩ কিমি. উত্তরে ছিলো। পায়রা নদীর অব্যাহত ভাঙনে বাবার আমলে ২বার এবং আমাদের আমলে ৩বার বসত বাড়ি স্থানান্তর করতে হয়েছে। বর্তমানেও ঝুঁকিতে আছি। আমাদের মত অনেকেই এখন বসত ঘরসহ সবকিছু ভেঙে সরকারি রাস্তার পাশে সরিয়ে নিতেছি।

আঙ্গারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভাঙ্গন কবলিত ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহীন গাজী বলেন, গতকাল এক ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে। সকালে খেয়াঘাট এলাকার বেশ কিছু এলাকাজুড়ে বিশাল ফাটল ধরে হঠাৎ নদী গর্ভে দেবে যায়। এতে ৩জনকে ট্রলার যোগে উদ্ধার করা হয়। এরমধ্যে একজন মহিলাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এযাবৎ এই এলাকার প্রায় দু’শ একর জমিসহ, ৩শতাধিক ঘর বাড়ি, ৩টি মসজিদ, ৪টি মন্দির, একটি সরকারি অফিসসহ রাস্তাঘাট পায়রা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গন এলাকার লোকজন অপরের বাড়ির গোয়াল ঘর, পাঁকের ঘর, সরকারি রাস্তার পাশে মানবেতর জীবন যাপন করছে। কিছু কিছু লোকজন অন্যান্য এলাকায় ও চলে গেছে।

আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান সোহরাব সরেজমিনে এসে জানান, বাহের চর মৌজায় দীর্ঘ দিন যাবৎ পায়রা নদীর অব্যাহত ভাঙনে আতঙ্কিত এলাকাবাসী। অর্ধশত পরিবার নদী ভাঙ্গনে সবকিছু হারিয়ে এখান থেকে চলে গেছে। ভাঙ্গন কবলিত অসহায়দের পুনর্বাসন এবং স্থায়ীভাবে পাইলিং ও ব্লোক ফেলে নদী ভাঙ্গন রোধে যথাযথ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

দুমকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহীন মাহমুদ বলেন, এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে, দ্রুত নদী ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফ হোসেন জানান, বাহেরচরের নদী ভাঙনরোধে এর আগেও আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি চলতি বছরের নভেম্বর মাসে আবার জিওব্যাগ স্থাপন করা হবে।এছাড়াও স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হয়েছে।



নিউজটি শেয়ার করুন








নদী ভাঙনে দিশেহারা মানুষ, অর্ধশত বসতভিটা পায়রার গর্ভে বিলীন

আপডেটের সময় : ০৯:১১:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

দুমকি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বাহেরচর এলাকায় অর্ধশত পরিবার ঘরবাড়ি সর্বগ্রাসী পায়রার অব্যাহত ভাঙনে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। চলতি মৌসুমে ঘরবাড়ি হারিয়েছে অর্ধশতাধিক পরিবার।

সরেজমিনে দেখা যায়, পশ্চিম আঙ্গারিয়া বাহেরচর এলাকার প্রায় ২কি.মি. এলাকাজুড়ে পায়রা নদীর অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গন কবলিত এলাকার লোকজন সরকারি রাস্তার পাশে, বিভিন্ন এলাকায় আত্মীয়-স্বজনের গোয়াল ঘর, পাঁকের ঘরে কোনো রকম মানবেতর জীবন যাপন করছে। আবার কিছু লোকজন পরিবার পরিজন নিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। দীর্ঘদিন যাবৎ পায়রা নদীর অব্যাহত ভাঙনে ইতিমধ্যে প্রায় আড়াই কি.মি. এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বলে জানান স্থানীয়রা। এসব এলাকায় ঘর বাড়ি, মসজিদ, মন্দির, রাস্তা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

স্থানীয় ভূক্তভোগী সুধান চন্দ্র মিস্ত্রী (৫০) ও সুধারঞ্জন চন্দ্র মিস্ত্রী (৮০) বলেন, আমাদের বাড়ি এখান থেকে ২থেকে ৩ কিমি. উত্তরে ছিলো। পায়রা নদীর অব্যাহত ভাঙনে বাবার আমলে ২বার এবং আমাদের আমলে ৩বার বসত বাড়ি স্থানান্তর করতে হয়েছে। বর্তমানেও ঝুঁকিতে আছি। আমাদের মত অনেকেই এখন বসত ঘরসহ সবকিছু ভেঙে সরকারি রাস্তার পাশে সরিয়ে নিতেছি।

আঙ্গারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভাঙ্গন কবলিত ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহীন গাজী বলেন, গতকাল এক ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে। সকালে খেয়াঘাট এলাকার বেশ কিছু এলাকাজুড়ে বিশাল ফাটল ধরে হঠাৎ নদী গর্ভে দেবে যায়। এতে ৩জনকে ট্রলার যোগে উদ্ধার করা হয়। এরমধ্যে একজন মহিলাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এযাবৎ এই এলাকার প্রায় দু’শ একর জমিসহ, ৩শতাধিক ঘর বাড়ি, ৩টি মসজিদ, ৪টি মন্দির, একটি সরকারি অফিসসহ রাস্তাঘাট পায়রা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গন এলাকার লোকজন অপরের বাড়ির গোয়াল ঘর, পাঁকের ঘর, সরকারি রাস্তার পাশে মানবেতর জীবন যাপন করছে। কিছু কিছু লোকজন অন্যান্য এলাকায় ও চলে গেছে।

আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান সোহরাব সরেজমিনে এসে জানান, বাহের চর মৌজায় দীর্ঘ দিন যাবৎ পায়রা নদীর অব্যাহত ভাঙনে আতঙ্কিত এলাকাবাসী। অর্ধশত পরিবার নদী ভাঙ্গনে সবকিছু হারিয়ে এখান থেকে চলে গেছে। ভাঙ্গন কবলিত অসহায়দের পুনর্বাসন এবং স্থায়ীভাবে পাইলিং ও ব্লোক ফেলে নদী ভাঙ্গন রোধে যথাযথ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

দুমকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহীন মাহমুদ বলেন, এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে, দ্রুত নদী ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফ হোসেন জানান, বাহেরচরের নদী ভাঙনরোধে এর আগেও আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি চলতি বছরের নভেম্বর মাসে আবার জিওব্যাগ স্থাপন করা হবে।এছাড়াও স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হয়েছে।