ঢাকা ১১:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যে কোনো মুহূর্তে ধসে যেতে পারে ব্রিজ, হতে পারে বড় দুর্ঘটনা!

মাইনুদ্দিন আল আতিক
  • আপডেটের সময় : ০৯:১৩:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৬৮০

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পটুয়াখালীর মহিপুর থানাধীন লতাচাপলী ইউনিয়নের তাহেরপুর ও আজিমপুর গ্রামের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত লক্ষ্মীর খালের উপর নির্মিত আয়রণ ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যে কোনো মুহূর্তে ধসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে জেনেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গত তিন বছর যাবৎ এভাবেই চলাচল করছে পথচারীরা। তবে ব্রিজে যাতে কোনো যানবাহন চলাচল করতে না পারে সেজন্য স্থানীয়রা দু’পাশে গাছের বেড়া দিয়ে আটকে দিয়েছে। সেতুটি অপসারণ করে নতুন গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ২০০১ সালে নির্মিত এই ব্রিজটি দুই যুগ না পেরোতেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ব্রিজের মূল অংশের অবকাঠামো অনেকটা ধসে পড়েছে। মরিচা ধরে নিচের লোহার অ্যাঙ্গেলগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। কাঠের তক্তা দ্বারা কোনোমতে জোড়াতালি দিয়ে পারাপার হচ্ছে মানুষ। দুর্ঘটনা এড়াতে ব্রিজের দু’পাশে গাছের বেড়া দিয়েছে স্থানীয়রা। যাতে ভুলেও ব্রিজে কোনো যানবাহন উঠতে না পারে। তাহেরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আজিমপুর এ.কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছে দু’পাড়ের দশ গ্রামের কয়েক হাজার কৃষক। তাদের উৎপাদিত ফসল নিতে পারছেন না বাজারে। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা পর্যটকসহ অসুস্থ রোগীদের।

স্থানীয় বাসিন্দা আল-আমিন হোসেন নীরব বলেন, ‘আমরা দুর্ঘটনা এড়াতে ব্রিজের দু’পাশে গাছের বেড়া দিয়ে রেখেছি। যাতে লোকজন হেঁটে পার হলেও গাড়ি চলাচল করতে না পারে। গাড়ি চলাচল করলে এতদিনে ধসে পড়ত। কয়েকবার কাঠের তক্তা দিয়ে জোড়াতালি দিয়েছি। এখন আর জোড়াতালি দেয়াও সম্ভব হচ্ছে না। এভাবে বেশিদিন থাকলে আকস্মিক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এটি অপসারণ করে শীঘ্রই একটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।’

আজিমপুর এ.কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে আমাদের। সেটাতে উঠলেই ভয় করে। কখন দুর্ঘটনা ঘটে বলা যাচ্ছে না।’

তাহেরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল বাশার হাওলাদার বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটি গুরুত্বপূর্ণ থাকলেও এটি অপসারণ কিংবা নতুন ব্রিজ নির্মাণের কোনো উদ্যোগ দেখছি না। আমিও প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে এই ব্রিজ পার হয়ে বিদ্যালয় আসছি।’

কলাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) কাজী ফয়সাল বারী পূর্ণ অচিরেই নতুন ব্রীজ নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ থাকা এ ব্রিজটির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।’

এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘ব্রিজটি নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ হয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করার উদ্যোগ নেয়া হবে।’



নিউজটি শেয়ার করুন








যে কোনো মুহূর্তে ধসে যেতে পারে ব্রিজ, হতে পারে বড় দুর্ঘটনা!

আপডেটের সময় : ০৯:১৩:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পটুয়াখালীর মহিপুর থানাধীন লতাচাপলী ইউনিয়নের তাহেরপুর ও আজিমপুর গ্রামের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত লক্ষ্মীর খালের উপর নির্মিত আয়রণ ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যে কোনো মুহূর্তে ধসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে জেনেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গত তিন বছর যাবৎ এভাবেই চলাচল করছে পথচারীরা। তবে ব্রিজে যাতে কোনো যানবাহন চলাচল করতে না পারে সেজন্য স্থানীয়রা দু’পাশে গাছের বেড়া দিয়ে আটকে দিয়েছে। সেতুটি অপসারণ করে নতুন গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ২০০১ সালে নির্মিত এই ব্রিজটি দুই যুগ না পেরোতেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ব্রিজের মূল অংশের অবকাঠামো অনেকটা ধসে পড়েছে। মরিচা ধরে নিচের লোহার অ্যাঙ্গেলগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। কাঠের তক্তা দ্বারা কোনোমতে জোড়াতালি দিয়ে পারাপার হচ্ছে মানুষ। দুর্ঘটনা এড়াতে ব্রিজের দু’পাশে গাছের বেড়া দিয়েছে স্থানীয়রা। যাতে ভুলেও ব্রিজে কোনো যানবাহন উঠতে না পারে। তাহেরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আজিমপুর এ.কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছে দু’পাড়ের দশ গ্রামের কয়েক হাজার কৃষক। তাদের উৎপাদিত ফসল নিতে পারছেন না বাজারে। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা পর্যটকসহ অসুস্থ রোগীদের।

স্থানীয় বাসিন্দা আল-আমিন হোসেন নীরব বলেন, ‘আমরা দুর্ঘটনা এড়াতে ব্রিজের দু’পাশে গাছের বেড়া দিয়ে রেখেছি। যাতে লোকজন হেঁটে পার হলেও গাড়ি চলাচল করতে না পারে। গাড়ি চলাচল করলে এতদিনে ধসে পড়ত। কয়েকবার কাঠের তক্তা দিয়ে জোড়াতালি দিয়েছি। এখন আর জোড়াতালি দেয়াও সম্ভব হচ্ছে না। এভাবে বেশিদিন থাকলে আকস্মিক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এটি অপসারণ করে শীঘ্রই একটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।’

আজিমপুর এ.কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে আমাদের। সেটাতে উঠলেই ভয় করে। কখন দুর্ঘটনা ঘটে বলা যাচ্ছে না।’

তাহেরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল বাশার হাওলাদার বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটি গুরুত্বপূর্ণ থাকলেও এটি অপসারণ কিংবা নতুন ব্রিজ নির্মাণের কোনো উদ্যোগ দেখছি না। আমিও প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে এই ব্রিজ পার হয়ে বিদ্যালয় আসছি।’

কলাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) কাজী ফয়সাল বারী পূর্ণ অচিরেই নতুন ব্রীজ নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ থাকা এ ব্রিজটির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।’

এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘ব্রিজটি নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ হয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করার উদ্যোগ নেয়া হবে।’