ঢাকা ১১:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অবশেষে বরগুনার সেই ক্লিনিক সীলগালা

নিউজ রুম
  • আপডেটের সময় : ০৩:১৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ৭২৩

ইসহাক জুয়েল, বরগুনা প্রতিনিধিঃ মৃত্যুপুরী হিসেবে খ্যাত বরগুনার কুয়েত প্রবাসী হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি সিলগালা করেছে বরগুনা জেলা প্রশাসন।

গতকাল (২৩ ফ্রেব্রুয়ারী) বিকেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা হয়। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহফুজুর রহমান। জানা যায়, বরগুনার বদরখালী এলাকার তানজিলা পুতুল নামে এক প্রসূতি এই হাসপাতালে ভর্তি হয়।সিজার অপারেশন শুরু হলে তার ২০ মিনিটের মধ্যে নবজাতককে বের করার সাথে সাথে পুতুল ব্যাথায় চিৎকার করে ওঠেন।

বাঁচাও বাঁচাও বলে মাকে ডাক দিলে ক্লিনিকের সবাই আতকে ওঠেন। একপর্যায়ে প্রসূতীর অবস্থার অবনতি হওয়ার কারণে অপারেশন থিয়েটার থেকে ডাক্তারসহ ক্লিনিকের সকল স্টাফরা পালিয়ে যায়। স্বজনরা দ্রুত বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পুতুলকে নিয়ে গেলে জীবন সংকটাপন্ন থাকার কারনে অক্সিজেন ভেল্টিলেশনের মাধ্যমে দ্রুত বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজে রেফার করে কতৃপক্ষ। সেখানকার দায়িত্বরত ডাক্তার পুতুলের অবস্থা আশংকাজনক দেখে দ্রুত নিবির পরিচর্যা কেন্দ্র (আই.সি.ইউ) তে ভর্তি করে। পরবর্তীতে পুতুল ভোর ৫.২০ মিনিটে মারা গেছেন বলে ঘোষণা দেয় ডাক্তাররা। এরপর থেকে হাসপাতালটির চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এ ঘটনার পর (২২ ফেব্রুয়ারী) সকাল থেকেই হাসপাতালে তালা লাগিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে হাসপাতালটির মালিক ও স্টাফরা।

বিষয়টি নিয়ে “বরগুনা কুয়েত প্রবাসী হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু” শিরোনামে পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। এরপর বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই ক্লিনিকে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে জেলা প্রশাসন। এসময় হাসপাতালের কতৃপক্ষ, ডাক্তার, নার্সদের না পাওয়া প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা হয়। এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহফুজুর রহমান বলেন, প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স আছে কিনা দেখার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করি। তবে ওই প্রতিষ্ঠানের কোন কতৃপক্ষকে পাওয়া যায়নি। ক্লিনিকটি তালা লাগানো ছিল। তাই প্রতিষ্ঠানটিকে সিলগালা করা হয়। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার সময় সিভিল সার্জন অফিসের মেডিক্যাল অফিসার মেহেদী হাসান উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছরে ভুল চিকিৎসায় একাধিক রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে এই ক্লিনিকে।

এছাড়াও কয়েক বছর আগে এই হাসপাতালে ভর্তিকৃত এক নবজাতক চুরি করে বিক্রির সময় হাতেনাতে ধরা পরে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার। প্রতি বছরই এখানে ভুল চিকিৎসায় কোন না কোন প্রসূতি মারা যায়। সবশেষ ২১ ফেব্রুয়ারী আরেক প্রসূতির মৃত্যু হয়, স্বজনদের দাবি ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে তার। ভুল চিকিৎসায় আর কোন রোগীর যেন মৃত্যু না হয়, সেজন্য এই হাসপাতালটি বন্ধের দাবি ওঠে সচেতন মহলে।



নিউজটি শেয়ার করুন








অবশেষে বরগুনার সেই ক্লিনিক সীলগালা

আপডেটের সময় : ০৩:১৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

ইসহাক জুয়েল, বরগুনা প্রতিনিধিঃ মৃত্যুপুরী হিসেবে খ্যাত বরগুনার কুয়েত প্রবাসী হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি সিলগালা করেছে বরগুনা জেলা প্রশাসন।

গতকাল (২৩ ফ্রেব্রুয়ারী) বিকেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা হয়। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহফুজুর রহমান। জানা যায়, বরগুনার বদরখালী এলাকার তানজিলা পুতুল নামে এক প্রসূতি এই হাসপাতালে ভর্তি হয়।সিজার অপারেশন শুরু হলে তার ২০ মিনিটের মধ্যে নবজাতককে বের করার সাথে সাথে পুতুল ব্যাথায় চিৎকার করে ওঠেন।

বাঁচাও বাঁচাও বলে মাকে ডাক দিলে ক্লিনিকের সবাই আতকে ওঠেন। একপর্যায়ে প্রসূতীর অবস্থার অবনতি হওয়ার কারণে অপারেশন থিয়েটার থেকে ডাক্তারসহ ক্লিনিকের সকল স্টাফরা পালিয়ে যায়। স্বজনরা দ্রুত বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পুতুলকে নিয়ে গেলে জীবন সংকটাপন্ন থাকার কারনে অক্সিজেন ভেল্টিলেশনের মাধ্যমে দ্রুত বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজে রেফার করে কতৃপক্ষ। সেখানকার দায়িত্বরত ডাক্তার পুতুলের অবস্থা আশংকাজনক দেখে দ্রুত নিবির পরিচর্যা কেন্দ্র (আই.সি.ইউ) তে ভর্তি করে। পরবর্তীতে পুতুল ভোর ৫.২০ মিনিটে মারা গেছেন বলে ঘোষণা দেয় ডাক্তাররা। এরপর থেকে হাসপাতালটির চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এ ঘটনার পর (২২ ফেব্রুয়ারী) সকাল থেকেই হাসপাতালে তালা লাগিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে হাসপাতালটির মালিক ও স্টাফরা।

বিষয়টি নিয়ে “বরগুনা কুয়েত প্রবাসী হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু” শিরোনামে পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। এরপর বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই ক্লিনিকে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে জেলা প্রশাসন। এসময় হাসপাতালের কতৃপক্ষ, ডাক্তার, নার্সদের না পাওয়া প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা হয়। এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহফুজুর রহমান বলেন, প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স আছে কিনা দেখার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করি। তবে ওই প্রতিষ্ঠানের কোন কতৃপক্ষকে পাওয়া যায়নি। ক্লিনিকটি তালা লাগানো ছিল। তাই প্রতিষ্ঠানটিকে সিলগালা করা হয়। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার সময় সিভিল সার্জন অফিসের মেডিক্যাল অফিসার মেহেদী হাসান উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছরে ভুল চিকিৎসায় একাধিক রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে এই ক্লিনিকে।

এছাড়াও কয়েক বছর আগে এই হাসপাতালে ভর্তিকৃত এক নবজাতক চুরি করে বিক্রির সময় হাতেনাতে ধরা পরে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার। প্রতি বছরই এখানে ভুল চিকিৎসায় কোন না কোন প্রসূতি মারা যায়। সবশেষ ২১ ফেব্রুয়ারী আরেক প্রসূতির মৃত্যু হয়, স্বজনদের দাবি ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে তার। ভুল চিকিৎসায় আর কোন রোগীর যেন মৃত্যু না হয়, সেজন্য এই হাসপাতালটি বন্ধের দাবি ওঠে সচেতন মহলে।