ঢাকা ০৩:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাণীশংকৈলে মাল্টা চাষে ভাগ্য পরিবর্তনের স্বপ্ন বুনেছেন শিক্ষক সাদেক

নিউজ রুম
  • আপডেটের সময় : ০২:৩৩:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / ৬৫৯

মোঃ আকতারুল ইসলাম আক্তার, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধিঃ স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পরিত্যক্ত জমিতে করেছেন ফলের বাগান। বাগানে শোভা পাচ্ছে মাল্টা। তিনি হলেন ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়নের করনাইট কুমারগঞ্জ গ্রামের মৃতঃ কুমের আলীর ছেলে ও বালিয়াডাঙ্গী সরকারি শহীদ আকবর আলী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কলেজের প্রভাষক সাদেকুল ইসলাম সাদেক। বাগান করে তিনি যেমন সফল, তেমনি তাকে দেখে এলাকার মানুষদের মধ্যে বাগান করার আগ্রহ বেড়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, নিজের জমিতে লাগানো ফলের পরিচর্যায় ব্যস্ত এ শিক্ষক। যদিও বাগানটি দেখাশোনার জন্য ২ জনকে রাখা হয়েছে। তারপর তিনি নিজেও বাগানের পরিচর্যা করেন। এলাকাবাসীসহ দূর-দূরান্ত থেকে অনেকইে তার বাগান দেখতে আসছেন।

জানা গেছে, তিন বছর আগে রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে মাল্টা চাষের বিষয়টি জানতে পারেন শিক্ষক সাদেকুল ইসলাম সাদেক। পরবর্তীতে তিনি তার পরিত্যক্ত জমিটি ব্যবহার করার চিন্তা করেন। স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে শুরু করেন ফলের বাগান। যদিও মাল্টা চাষ তার কাছে একেবারেই নতুন ছিল।

শুরুর দিকে প্রায় আড়াই লাখ টাকার মতো খরচ হয়। যদিও সেই সময় নিজের প্রতি তেমন ভরসা ছিল না। তবে মনে ছিল সফলতার স্বপ্ন। আজ যেন তার সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। বাগান করার দুই বছরের মধ্যেই খরচের টাকা উঠে লাভ আসতে শুরু করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা রাফসান জানি (সানি) বলেন, শিক্ষক সাদেকুল ফলের বাগান করে আমাদের তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। শুনেছি তিনি মাল্টা ফলের চাষ শুরু করে।

আজ তার এই সফলতা দেখে আমি আনন্দিত। তিনি তার বাগানের ফলমূল এলাকাবাসীকে খেতে দেন। তার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছি। কিভাবে আমার বাসায় একটি বাগান করলে আমিও একজন সফল চাষী হতে পারব।

স্থানীয় আসাদুজ্জামান আসাদ, বলেন, শিক্ষক সাদেকুল ইসলাম আমাদের এলাকায় ফলের বাগান করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তার কাছ থেকে আমরাও অনেক কিছু শিখছি। মাল্টা ফল চাষ করে এতটা লাভবান হওয়া যায় তা জানা ছিল না।

শিক্ষক সাদেকুল ইসলাম সাদেক সাংবাদিক মোঃ আকতারুল ইসলাম আক্তার কে বলেন, রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে মাল্টা ফল চাষের বিষয়টি আমি জানতে পারি। এরপর এটা নিয়ে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করি। তাদের সহযোগিতায় নিজের পরিত্যক্ত জমিটি পরিষ্কার করে সেখানে মাল্টা ফলের চাষ শুরু করি।

দুই বছরের মাথায় ফল বিক্রি করে খরচের টাকা উঠে লাভ করতে শুরু করি। এরপর একই বাগানে পেঁপেসহ বিভিন্ন ফল চাষ করি। গত বছর এক লাখের বেশি টাকার ফল বিক্রি করেছি।

তিনি আরও বলেন, বাগানের মাধ্যমে সমাজের বেকারত্ব অনেকটাই কমে আসবে। সেইসঙ্গে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারেন যে কেউ। যদি কেউ তার বাসার ছাদে কিংবা বাসার পাশে এমন বাগান করে তাহলে পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবেও সফল হবেন।

রাণীশংকৈল উপজেলার কৃষি অফিসার সঞ্জয় দেবনাথ, বলেন, আমরা প্রকল্পের আওতায় আগ্রহীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। মাল্টা বা লেবু জাতীয় ফলে যেহেতু অল্প খরচে চাষীরা বেশি লাভবান হয়, তাই এ ফল সম্প্রসারণের মাধ্যমে আমাদের কৃষির উন্নয়ন হবে বলে আমি মনে করি।



নিউজটি শেয়ার করুন








রাণীশংকৈলে মাল্টা চাষে ভাগ্য পরিবর্তনের স্বপ্ন বুনেছেন শিক্ষক সাদেক

আপডেটের সময় : ০২:৩৩:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

মোঃ আকতারুল ইসলাম আক্তার, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধিঃ স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পরিত্যক্ত জমিতে করেছেন ফলের বাগান। বাগানে শোভা পাচ্ছে মাল্টা। তিনি হলেন ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়নের করনাইট কুমারগঞ্জ গ্রামের মৃতঃ কুমের আলীর ছেলে ও বালিয়াডাঙ্গী সরকারি শহীদ আকবর আলী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কলেজের প্রভাষক সাদেকুল ইসলাম সাদেক। বাগান করে তিনি যেমন সফল, তেমনি তাকে দেখে এলাকার মানুষদের মধ্যে বাগান করার আগ্রহ বেড়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, নিজের জমিতে লাগানো ফলের পরিচর্যায় ব্যস্ত এ শিক্ষক। যদিও বাগানটি দেখাশোনার জন্য ২ জনকে রাখা হয়েছে। তারপর তিনি নিজেও বাগানের পরিচর্যা করেন। এলাকাবাসীসহ দূর-দূরান্ত থেকে অনেকইে তার বাগান দেখতে আসছেন।

জানা গেছে, তিন বছর আগে রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে মাল্টা চাষের বিষয়টি জানতে পারেন শিক্ষক সাদেকুল ইসলাম সাদেক। পরবর্তীতে তিনি তার পরিত্যক্ত জমিটি ব্যবহার করার চিন্তা করেন। স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে শুরু করেন ফলের বাগান। যদিও মাল্টা চাষ তার কাছে একেবারেই নতুন ছিল।

শুরুর দিকে প্রায় আড়াই লাখ টাকার মতো খরচ হয়। যদিও সেই সময় নিজের প্রতি তেমন ভরসা ছিল না। তবে মনে ছিল সফলতার স্বপ্ন। আজ যেন তার সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। বাগান করার দুই বছরের মধ্যেই খরচের টাকা উঠে লাভ আসতে শুরু করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা রাফসান জানি (সানি) বলেন, শিক্ষক সাদেকুল ফলের বাগান করে আমাদের তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। শুনেছি তিনি মাল্টা ফলের চাষ শুরু করে।

আজ তার এই সফলতা দেখে আমি আনন্দিত। তিনি তার বাগানের ফলমূল এলাকাবাসীকে খেতে দেন। তার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছি। কিভাবে আমার বাসায় একটি বাগান করলে আমিও একজন সফল চাষী হতে পারব।

স্থানীয় আসাদুজ্জামান আসাদ, বলেন, শিক্ষক সাদেকুল ইসলাম আমাদের এলাকায় ফলের বাগান করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তার কাছ থেকে আমরাও অনেক কিছু শিখছি। মাল্টা ফল চাষ করে এতটা লাভবান হওয়া যায় তা জানা ছিল না।

শিক্ষক সাদেকুল ইসলাম সাদেক সাংবাদিক মোঃ আকতারুল ইসলাম আক্তার কে বলেন, রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে মাল্টা ফল চাষের বিষয়টি আমি জানতে পারি। এরপর এটা নিয়ে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করি। তাদের সহযোগিতায় নিজের পরিত্যক্ত জমিটি পরিষ্কার করে সেখানে মাল্টা ফলের চাষ শুরু করি।

দুই বছরের মাথায় ফল বিক্রি করে খরচের টাকা উঠে লাভ করতে শুরু করি। এরপর একই বাগানে পেঁপেসহ বিভিন্ন ফল চাষ করি। গত বছর এক লাখের বেশি টাকার ফল বিক্রি করেছি।

তিনি আরও বলেন, বাগানের মাধ্যমে সমাজের বেকারত্ব অনেকটাই কমে আসবে। সেইসঙ্গে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারেন যে কেউ। যদি কেউ তার বাসার ছাদে কিংবা বাসার পাশে এমন বাগান করে তাহলে পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবেও সফল হবেন।

রাণীশংকৈল উপজেলার কৃষি অফিসার সঞ্জয় দেবনাথ, বলেন, আমরা প্রকল্পের আওতায় আগ্রহীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। মাল্টা বা লেবু জাতীয় ফলে যেহেতু অল্প খরচে চাষীরা বেশি লাভবান হয়, তাই এ ফল সম্প্রসারণের মাধ্যমে আমাদের কৃষির উন্নয়ন হবে বলে আমি মনে করি।