ঢাকা ০২:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দালাল চক্রের প্ররোচনায় সখীপুরে কলা বাগান কর্তন করলেন বনবিভাগ

নিউজ রুম
  • আপডেটের সময় : ০১:২৮:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুন ২০২১
  • / ৮১০

সখিপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতাঃ সখীপুরে এক অসহায় কৃষকের আটশত কলা গাছ অন্যায়ভাবে কেটে দিল বন বিভাগ। অসহায় ওই কৃষকের শেষ আশ্রয়স্থল কলাবাগান কেটে ফেলায় দিশেহারা সে।

মঙ্গলবার সকালে উপজেলার কালিয়ান পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বন বিভাগ বিনা নোটিশে বন বিভাগের দালাল চক্রের উৎসাহে অসহায় কৃষকের প্রায় আট শতাধিক কলাগাছ কেটে ফেলে। এই ঘটনায় ওই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রায় তিন লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে।

জানা যায়, উপজেলার কালিয়ান পাড়া গ্রামে দীর্ঘদিনের আবাদি জমিতে বাঘবেড় এলাকার শামসুল আলমের ছেলে শহিদুল ইসলাম জমি লিজ নিয়ে ৮ শতাধিক কলা গাছ লাগান। কলা গাছের বয়স ৩ মাসের উপরে। এই গাছগুলো পরিচর্যা করতে এ পর্যন্ত ওই মালিকের ৩ লক্ষ টাকার মতো খরচ হয়েছে। ওই গাছগুলো কেটে ফেলায় দরিদ্র কৃষক চরমভাবে হতাশ হয়ে পড়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, এনজিও থেকে লোন নিয়ে অনেক আশা নিয়ে কলা চাষ শুরু করেছিলাম। গাছ গুলোও হয়েছিল ভাল। স্বপ্ন পূরণের আগেই বিনা নোটিশে বন বিভাগের দালাল চক্রের যোগসাজশে আমার কলাবাগান কেটে ফেলল বন বিভাগ। আমার সর্বস্ব দিয়ে ওই বাগানে খরচ করেছিলাম, আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম। আমার সংসার সচ্ছল ভাবে চলার আর কোন পথ রইল না। এখন আমি কি দিয়ে এনজিও থেকে লোন করা টাকা পরিশোধ করব?

ওই কলাবাগানের পাশে বসবাসকারী হনুফা বেগম (৫০) বলেন, আমরা প্রায় চল্লিশ বছর যাবত এখানে বসবাস করছি। এ জমিতে বনবিভাগের কোনো বৃক্ষ নেই। এমনকি বন বিভাগের কোনো জমি নেই। অন্যের প্ররোচনায় বন বিভাগ একজন নিরীহ মানুষের স্বপ্ন নষ্ট করে ফেলেছে। আল্লাহ বিচার করবে।

একই গ্রামের আয়েশা বেগম (৫৫) বলেন, বনের জমি হলেও না হলেও কোন ঘর বা গাছ লাগাত গেলে বনবিভাগ ও এলাকার দালাল চক্রদের টাকা না দিয়ে কাজ করা যায় না। সরকারের কাছে বিচার দাবী করি এই ঘটনার বিচার যেন পায় ওই গরীব মানুষ।

সামাজিক বনায়ন কমিটির সভাপতি ও প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি মতিউর রহমান বলেন, ওই জমি বনবিভাগের সামাজিক বনায়নের কোনো গাছ ছিলনা। কলাবাগানের জমিটি ব্যক্তির মালিকানার দখলে। কৃষকের এত বড় ক্ষতি বনবিভাগের করা ঠিক হয়নি।

টাকা নিয়ে বন বিভাগের জমিতে ঘর তৈরি করে দেয়ার অভিযুক্ত কালিদাস বিট কর্মকর্তা মোস্তানুর রহমান বলেন, ওই জমিটি প্লটের অন্তর্ভুক্ত বনের জমি, কলা গাছ কেটে উদ্ধার করা হয়েছে।

কীর্তনখোলা এলাকার টাকা নিয়ে ৬টি মুরগি ফার্মে তৈরির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এধরণের ঘটনা ভিত্তিহীন।

হতেয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আলাল খান বলেন, বনের জমি উদ্ধার করা হয়েছে। কলা গাছ কাটা হয়েছে কী না আমি জানি না।



নিউজটি শেয়ার করুন








দালাল চক্রের প্ররোচনায় সখীপুরে কলা বাগান কর্তন করলেন বনবিভাগ

আপডেটের সময় : ০১:২৮:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুন ২০২১

সখিপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতাঃ সখীপুরে এক অসহায় কৃষকের আটশত কলা গাছ অন্যায়ভাবে কেটে দিল বন বিভাগ। অসহায় ওই কৃষকের শেষ আশ্রয়স্থল কলাবাগান কেটে ফেলায় দিশেহারা সে।

মঙ্গলবার সকালে উপজেলার কালিয়ান পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বন বিভাগ বিনা নোটিশে বন বিভাগের দালাল চক্রের উৎসাহে অসহায় কৃষকের প্রায় আট শতাধিক কলাগাছ কেটে ফেলে। এই ঘটনায় ওই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রায় তিন লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে।

জানা যায়, উপজেলার কালিয়ান পাড়া গ্রামে দীর্ঘদিনের আবাদি জমিতে বাঘবেড় এলাকার শামসুল আলমের ছেলে শহিদুল ইসলাম জমি লিজ নিয়ে ৮ শতাধিক কলা গাছ লাগান। কলা গাছের বয়স ৩ মাসের উপরে। এই গাছগুলো পরিচর্যা করতে এ পর্যন্ত ওই মালিকের ৩ লক্ষ টাকার মতো খরচ হয়েছে। ওই গাছগুলো কেটে ফেলায় দরিদ্র কৃষক চরমভাবে হতাশ হয়ে পড়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, এনজিও থেকে লোন নিয়ে অনেক আশা নিয়ে কলা চাষ শুরু করেছিলাম। গাছ গুলোও হয়েছিল ভাল। স্বপ্ন পূরণের আগেই বিনা নোটিশে বন বিভাগের দালাল চক্রের যোগসাজশে আমার কলাবাগান কেটে ফেলল বন বিভাগ। আমার সর্বস্ব দিয়ে ওই বাগানে খরচ করেছিলাম, আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম। আমার সংসার সচ্ছল ভাবে চলার আর কোন পথ রইল না। এখন আমি কি দিয়ে এনজিও থেকে লোন করা টাকা পরিশোধ করব?

ওই কলাবাগানের পাশে বসবাসকারী হনুফা বেগম (৫০) বলেন, আমরা প্রায় চল্লিশ বছর যাবত এখানে বসবাস করছি। এ জমিতে বনবিভাগের কোনো বৃক্ষ নেই। এমনকি বন বিভাগের কোনো জমি নেই। অন্যের প্ররোচনায় বন বিভাগ একজন নিরীহ মানুষের স্বপ্ন নষ্ট করে ফেলেছে। আল্লাহ বিচার করবে।

একই গ্রামের আয়েশা বেগম (৫৫) বলেন, বনের জমি হলেও না হলেও কোন ঘর বা গাছ লাগাত গেলে বনবিভাগ ও এলাকার দালাল চক্রদের টাকা না দিয়ে কাজ করা যায় না। সরকারের কাছে বিচার দাবী করি এই ঘটনার বিচার যেন পায় ওই গরীব মানুষ।

সামাজিক বনায়ন কমিটির সভাপতি ও প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি মতিউর রহমান বলেন, ওই জমি বনবিভাগের সামাজিক বনায়নের কোনো গাছ ছিলনা। কলাবাগানের জমিটি ব্যক্তির মালিকানার দখলে। কৃষকের এত বড় ক্ষতি বনবিভাগের করা ঠিক হয়নি।

টাকা নিয়ে বন বিভাগের জমিতে ঘর তৈরি করে দেয়ার অভিযুক্ত কালিদাস বিট কর্মকর্তা মোস্তানুর রহমান বলেন, ওই জমিটি প্লটের অন্তর্ভুক্ত বনের জমি, কলা গাছ কেটে উদ্ধার করা হয়েছে।

কীর্তনখোলা এলাকার টাকা নিয়ে ৬টি মুরগি ফার্মে তৈরির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এধরণের ঘটনা ভিত্তিহীন।

হতেয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আলাল খান বলেন, বনের জমি উদ্ধার করা হয়েছে। কলা গাছ কাটা হয়েছে কী না আমি জানি না।