ঢাকা ০৩:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পঞ্চগড়ে মোটর শ্রমিকের চাঁদার টাকা যায় কোথায়?

নিউজ রুম
  • আপডেটের সময় : ১০:৪৭:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২১
  • / ৭১৮

 মোঃ সইনুল রহমান আকাশ, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড় জেলা মটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি নং রাজ ২৬৪ এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনাব আব্দুল লতিফ সাহেবের আহবানে ঐক্য পরিষদ গঠন আলোচনা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মকবুলার রহমান সরকারি কলেজ শাখার হল রুমে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, পঞ্চগড় জেলা মটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি নং রাজ ২৬৪ এর, সাবেক সহ সভাপতি, আব্দুল মতিন। সাবেক সাধারন সম্পাদক, এমদাদুল হক। সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, মো: জাকারিয়া জাকির। সাবেক সড়ক সম্পাদক ও জাতীয় শ্রমিক লীগ পঞ্চগড় জেলা শাখার আহবায়ক, শাহীন রেজা মিয়া ।

সাবেক ক্রিয়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয় শ্রমিক লীগ পঞ্চগড় জেলা শাখার সদস্য সচিব,মোঃ নুরুজ্জামান। সাবেক চালক শাখার, সভাপতি, আকতার হোসেন সহ পঞ্চগড় জেলা মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি নং রাজ ২৬৪ এর বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

উপস্থিত থেকে বক্তারা বলেন, পঞ্চগড় মোটর পরিবহন ও বিভিন্ন মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নামে বৈধ ও অবৈধভাবে তোলা হয়েছে কয়েক লক্ষ টাকা। অথচ করোনাভাইরাস সংকটে এসব তহবিল থেকে তেমন কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না শ্রমিকরা। পঞ্চগড়ে বাস টার্মিনালকেন্দ্রিক পরিবহন শ্রমিকদের আর্থিক সহযোগিতা করেননি মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।

এমনকি সহযোগিতা করার ভয়ে অনেক নেতা টার্মিনালেও যাচ্ছেন না বলে অভিযোগ শ্রমিকদের। এসব নেতাকে এখনই চিনে রাখার সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিভিন্ন স্তরের শ্রমিকরা। তাদের মতে, ভবিষ্যতে এসব ব্যক্তি যাতে নেতৃত্বে আসতে না পারে সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।

শুধু তাই নয়, পঞ্চগড় মোটর পরিবহন শ্রমিকরা এখন পর্যন্ত পাননি সরকারি ত্রাণও। এমন পরিস্থিতিতে টাকার অভাবে অর্ধাহারে ও অনাহারে থাকা শ্রমিকদের প্রশ্ন চাঁদার টাকা গেল কোথায়।

আরও জানা গেছে, শ্রমিকদের সহযোগিতার জন্য মূলত তিনটি খাত রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ শ্রমিক কল্যাণ তহবিল ও শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর শ্রমিক কল্যাণ তহবিল।

এই তিন তহবিলের বাইরে বিভিন্ন সংগঠনের নামে অবৈধভাবে বাসপ্রতি স্থানভেদে দৈনিক ১৯০ টাকা আদায় করা হয়। কোথাও চাঁদার পরিমাণ আরও বেশি। একইভাবে ট্রাক ও অন্যান্য গণপরিবহন থেকেও নেয়া হয়েছে চাঁদা। টার্মিনালভিত্তিক কমিটি দখল-পাল্টা দখলের কারসাজিতে ওই টাকা ভাগবাটোয়ারা ও আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছে অসংখ্য শ্রমিক।

পরিবহন খাতের চাঁদার টাকা তিনটি মহলে ভাগবাটোয়ারা করায় শ্রমিকরা আর্থিক সহযোগিতা পাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন পঞ্চগড় জেলা মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের, সাবেক সাধারণ সম্পাদক , আব্দুল লতিফ, তিনি বলেন, যখন গাড়ি সচল ছিল তখন পঞ্চগড়ে বাসপ্রতি দৈনিক ১৯০ টাকা করে নেওয়া হতো।

ট্রাক প্রতি নেওয়া হতো ৯০ টাকা। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের প্রতিটি গাড়ি থেকে নেওয়া হতো ৫০০ টাকা। প্রায় পঞ্চগড় জেলায় মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের ১০০ শাখা আছে। যার মোট সদস্য সংখ্যা ৬০০০ থেকে প্রায় ৯০০০ এর মধ্যেই।

এছাড়াও প্রতিটি সদস্যকে প্রতি মাসে দিতে হয় ২০ টাকা করে। নতুন শাখা নিতে গেলে দিতে হয় লক্ষ লক্ষ টাকা। এভাবে দৈনিক চাঁদা আদায় হলেও শ্রমিকরা অর্ধাহারে-অনাহারে দিন পার করছে । এর কারণ হচ্ছে, চাঁদার এসব টাকা মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতার পকেটে । এ কারণে করোনাভাইরাসের মতো বৈশ্বিক সমস্যার সময়ে শ্রমিকরা বঞ্চিত হয়েছে ।

এমনকি শ্রমিক ইউনিয়নের, কোনো সদস্য মারা গেলে মৃত্যুবরণকারী শ্রমিকের পরিবারকে কোনো সহযোগিতা করেননা বলে জানান সাবেক শ্রমিক নেতারা । রোগাক্রান্ত, দুর্ঘটনায় আহত বা নিহত শ্রমিকের পরিবারকে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে আর্থিক সহযোগিতা করার কথা গঠন তন্ত্রে বলা হয়েছে।



নিউজটি শেয়ার করুন








পঞ্চগড়ে মোটর শ্রমিকের চাঁদার টাকা যায় কোথায়?

আপডেটের সময় : ১০:৪৭:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ অগাস্ট ২০২১

 মোঃ সইনুল রহমান আকাশ, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড় জেলা মটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি নং রাজ ২৬৪ এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনাব আব্দুল লতিফ সাহেবের আহবানে ঐক্য পরিষদ গঠন আলোচনা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মকবুলার রহমান সরকারি কলেজ শাখার হল রুমে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, পঞ্চগড় জেলা মটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি নং রাজ ২৬৪ এর, সাবেক সহ সভাপতি, আব্দুল মতিন। সাবেক সাধারন সম্পাদক, এমদাদুল হক। সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, মো: জাকারিয়া জাকির। সাবেক সড়ক সম্পাদক ও জাতীয় শ্রমিক লীগ পঞ্চগড় জেলা শাখার আহবায়ক, শাহীন রেজা মিয়া ।

সাবেক ক্রিয়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয় শ্রমিক লীগ পঞ্চগড় জেলা শাখার সদস্য সচিব,মোঃ নুরুজ্জামান। সাবেক চালক শাখার, সভাপতি, আকতার হোসেন সহ পঞ্চগড় জেলা মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি নং রাজ ২৬৪ এর বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

উপস্থিত থেকে বক্তারা বলেন, পঞ্চগড় মোটর পরিবহন ও বিভিন্ন মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নামে বৈধ ও অবৈধভাবে তোলা হয়েছে কয়েক লক্ষ টাকা। অথচ করোনাভাইরাস সংকটে এসব তহবিল থেকে তেমন কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না শ্রমিকরা। পঞ্চগড়ে বাস টার্মিনালকেন্দ্রিক পরিবহন শ্রমিকদের আর্থিক সহযোগিতা করেননি মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।

এমনকি সহযোগিতা করার ভয়ে অনেক নেতা টার্মিনালেও যাচ্ছেন না বলে অভিযোগ শ্রমিকদের। এসব নেতাকে এখনই চিনে রাখার সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিভিন্ন স্তরের শ্রমিকরা। তাদের মতে, ভবিষ্যতে এসব ব্যক্তি যাতে নেতৃত্বে আসতে না পারে সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।

শুধু তাই নয়, পঞ্চগড় মোটর পরিবহন শ্রমিকরা এখন পর্যন্ত পাননি সরকারি ত্রাণও। এমন পরিস্থিতিতে টাকার অভাবে অর্ধাহারে ও অনাহারে থাকা শ্রমিকদের প্রশ্ন চাঁদার টাকা গেল কোথায়।

আরও জানা গেছে, শ্রমিকদের সহযোগিতার জন্য মূলত তিনটি খাত রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ শ্রমিক কল্যাণ তহবিল ও শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর শ্রমিক কল্যাণ তহবিল।

এই তিন তহবিলের বাইরে বিভিন্ন সংগঠনের নামে অবৈধভাবে বাসপ্রতি স্থানভেদে দৈনিক ১৯০ টাকা আদায় করা হয়। কোথাও চাঁদার পরিমাণ আরও বেশি। একইভাবে ট্রাক ও অন্যান্য গণপরিবহন থেকেও নেয়া হয়েছে চাঁদা। টার্মিনালভিত্তিক কমিটি দখল-পাল্টা দখলের কারসাজিতে ওই টাকা ভাগবাটোয়ারা ও আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছে অসংখ্য শ্রমিক।

পরিবহন খাতের চাঁদার টাকা তিনটি মহলে ভাগবাটোয়ারা করায় শ্রমিকরা আর্থিক সহযোগিতা পাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন পঞ্চগড় জেলা মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের, সাবেক সাধারণ সম্পাদক , আব্দুল লতিফ, তিনি বলেন, যখন গাড়ি সচল ছিল তখন পঞ্চগড়ে বাসপ্রতি দৈনিক ১৯০ টাকা করে নেওয়া হতো।

ট্রাক প্রতি নেওয়া হতো ৯০ টাকা। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের প্রতিটি গাড়ি থেকে নেওয়া হতো ৫০০ টাকা। প্রায় পঞ্চগড় জেলায় মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের ১০০ শাখা আছে। যার মোট সদস্য সংখ্যা ৬০০০ থেকে প্রায় ৯০০০ এর মধ্যেই।

এছাড়াও প্রতিটি সদস্যকে প্রতি মাসে দিতে হয় ২০ টাকা করে। নতুন শাখা নিতে গেলে দিতে হয় লক্ষ লক্ষ টাকা। এভাবে দৈনিক চাঁদা আদায় হলেও শ্রমিকরা অর্ধাহারে-অনাহারে দিন পার করছে । এর কারণ হচ্ছে, চাঁদার এসব টাকা মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতার পকেটে । এ কারণে করোনাভাইরাসের মতো বৈশ্বিক সমস্যার সময়ে শ্রমিকরা বঞ্চিত হয়েছে ।

এমনকি শ্রমিক ইউনিয়নের, কোনো সদস্য মারা গেলে মৃত্যুবরণকারী শ্রমিকের পরিবারকে কোনো সহযোগিতা করেননা বলে জানান সাবেক শ্রমিক নেতারা । রোগাক্রান্ত, দুর্ঘটনায় আহত বা নিহত শ্রমিকের পরিবারকে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে আর্থিক সহযোগিতা করার কথা গঠন তন্ত্রে বলা হয়েছে।