নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ‘ম্যানেজ করেই’ চলছে সাগরে মাছ শিকার!
- আপডেটের সময় : ০১:৫৩:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন ২০২২
- / ৭৬৬
বিশেষ প্রতিবেদক : প্রজনন মৌসুমে সামুদ্রিক মাছ রক্ষায় গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে ২১ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে। সরকারের মৎস্য বিভাগ সংশ্লিষ্ট এলাকায় গণসচেতনতায় মাইকিংসহ নানামুখী প্রচার চালায়। তবে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ছোট-বড় ট্রলার নিয়ে অবাধে চলছে মাছ শিকার। পটুয়াখালীর কুয়াকাটা এলাকায় বঙ্গোপসাগরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
মাছ শিকারে জেলেদের নিরাপত্তা দেয়ার নামে একটি চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তারা ট্রলারের আকারভেদে ২ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছে।
কুয়াকাটার গঙ্গামতি, কাউয়ার চর, লেম্বুর চর এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সাগর থেকে মাছ শিকার শেষে ফিরছে অনেক জেলে। আবার কেউ যাচ্ছে মাছ শিকারে। অন্তত অর্ধশত ইঞ্জিনচালিত ছোট ছোট নৌকা (স্থানীয়ভাবে ‘খুটা’ জেলে বলে পরিচিত) সৈকতের অদূরে মাছ শিকার করছে।
নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সাগরে মাছ ধরার সুযোগ করে দিতে একটি চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে নগদ টাকা। প্রতি খুটা জেলে নৌকা থেকে ২ হাজার এবং মাঝারি ট্রলার থেকে ৫ হাজার ও বড় ট্রলার থেকে ১০ হাজার টাকা করে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলেরা জানিয়েছেন, আড়তেই এই টাকা কেটে রাখা হয়।
কুয়াকাটা ও আলিপুরের আড়ৎগুলোতে প্রতিদিনই মাছের দেখা মিলছে এবং অবাধে প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে মাছ কেনা বেচা। এছাড়া বাসে করে কেউ কেউ ঢাকায় পাঠাচ্ছেন মাছ। তবে আড়ৎ ব্যবসায়ীরা বলছে, মৎস্য শিকারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সমূদ্রে, তবে নদীতে নিষেধাজ্ঞা নেই। আর এসকল মাছ নদীর বলে দাবি তাদের।
অনেকে আবার বলছেন, সমূদ্র থেকে মাছ শিকার করে এনে জেলেরা এবং আড়ৎ ব্যবসায়ীরা এগুলোকে ঘর গাঙ্গের মাছ বা নদীর মাছ বলে চালিয়ে দিচ্ছে, যা আসলে মিথ্যা।
কুয়াকাটা ও মহিপুরে মৎস্য ব্যবসায়ী শক্তিশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে জেলেদের কাছ থেকে ট্রলার প্রতি টাকা নিয়ে, বিভিন্ন দপ্তরে টাকা দিয়ে তাদের নির্বিঘ্নে মাছ ধরার ব্যবস্থা করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্র ছায়ায় সমূদ্রে মাছ ধরা নিষিদ্ধ এবং জাটকা নিধন বন্ধ থাকার পরেও এরা নির্বিঘ্নেই মাছ ক্রয়-বিক্রয় কার্যক্রম চালাচ্ছে।
এ ব্যাপারে মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার মোঃ আবুল খায়ের বলেন, আমরা এই ব্যাপারে তৎপর রয়েছি এবং অবরোধকালীন সময়ে কেউ প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে সমূদ্রে মাছ শিকার করলে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।
কুয়াকাটা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আক্তার মোর্সেদ বলেন, অবরোধকালীন সময়ে যাতে কেউ মাছ শিকার করতে না পারে এব্যাপারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, আমরা সর্বোচ্চ তৎপর রয়েছি এবং ইতিমধ্যে আমরা অনেককে জরিমানার আওতায় এনেছি। এছাড়া কেউ যেন আইন অমান্য করতে না পারে সে ব্যাপারে তদারকি করছি।






















