প্রযুক্তির মায়াজাল আপনাকে গ্রাস করছে নাতো?

- আপডেটের সময় : ০৩:৫৬:৩৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ নভেম্বর ২০২১
- / ৮৬১
বর্তমান বিশ্বের সব থেকে বর যোগাযোগ মাধ্যম হলো ফেসবুক!! অবাক হচ্ছেন? মোটেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ একসময় শুনতাম দিন দিন দেশ ও জাতির পরিবর্তন আসবে। দেশ নতুন কোনো সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে যাবে। কিন্তু আপনার তীক্ষ্ণ মেধা দিয়ে কি কখনো ভেবেছেন? দেশ ও জাতি নয় বরং আমাদের মাঝে বিস্তার লাভ করছে প্রযুক্তি, আমাদেরকে দুইয়ের কাজ একে করে দেওয়ার বাহানায় যেন ঠেলে দিচ্ছে কোনো এক মৃত্যু কুপে। ভেবেছেন কি? কোনো একদিন আমাদের এতই পরিবর্তন আসবে যে বন্ধু-বান্ধব নিজ ধর্ম-বর্ণ, পাড়া-প্রতিবেশি, ইমান-আমল সব কিছুই ভুলে যাবে!! সে পরে থাকবে কোনো এক রহস্যময় মায়াজালের রহস্য উদঘাটনের পিছনে। কিন্তু এটাও সত্য কেউ হয়ত এই রহস্যে ঘেরা মায়াজালের আসল রহস্য উদঘাটন করতে পারবে না! কারণ এর পিছনে রয়েছে কোনো বড় এক কালো শক্তি। যাদের মূল উদ্দেশ্য হলো যুবকদেরকে কিভাবে ব্যস্ত রাখা যায়। যুবকদেরকে ব্যস্ত রাখাই মানে কোনো একটা জাতি বা দেশকে অক্ষম করা! আর এই অক্ষমতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে মানুষের নিজস্ব চিন্তা চেতনা। সে যেন এখন আর মানুষ নেই, কোনো এক রিমোর্ট যেন তাকে কন্ট্রোল করছে। এভাবেই কন্ট্রোলিং এর মাধ্যমে এক পর্যায়ে কোনো জাতি বা দেশকে অপর কোনো এক কালো শক্তি গ্রাস করে নিয়ে যাচ্ছে। যেন কারোই নেই এর নজরদারি, কেউ যেন লাগাচ্ছেন না তাদের গায়ে। সেই সাথে প্রযুক্তি এই অবেলার বড় এক ছলনায় যেন ডুব দিয়েছে হাজারো মানুষ।
সেই একই যুক্তিতে তৈরি হলো (window) উইনডো যার অর্থ দারায় জানালা! আর যে এই জানালা দিয়ে একবার উঁকি মারে সে অন্য কোনো কালো শক্তির কাছে ধরাসায়ী হয়ে যাবে এটাই তাদের ফাদ! যখন সে এই (Window) জানালা এর ফাঁকা দিয়ে মাথা বের করছে সে যেন আর ঘরে ফিরছে না!! যেখানে একটা সময় ছিল স্কুল, কলেজ ছুটির পরে বন্ধুরা মিলে মাঠে খেলতে যেত। আর সেখানে আজ স্কুল, কলেজ ছুটির পরে শুরু হয় গেমস আর চ্যাটিং এর মহা আসর। ঘন্টার পরে ঘন্টা কেটেই যাচ্ছে। তবুও যেন শেষ হচ্ছে না তাদের সময় ও আগ্রহ। এইসব ফাঁদে পা দিয়ে বর্তমানের যুবকরা ভয়ংকর আরেক রাজ্যে পাড়ি জমাচ্ছে। রাত হলে বা একা থাকলেই যেন খুশির আমেজ ফুটে ওঠে সেই রাজ্যে। যাকে বিভিন্ন নামে মানুষ চিনে থাকেন, নীল দুনিয়া, একাকিত্বের সঙ্গি, ইত্যাদি। তবে শুদ্ধ ভাবে যার নাম (পর্নোগ্রাফি) নামেই বেশ পরিচিত।
১৬ থেকে ২২ বছর পর্যন্ত বয়সের ছেল মেয়েরা ৯৯% এই পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত। এরা এখন চাইলেই যেন আর পারছে না স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে। কেন যেন দিন দিন তাদের মুখ ভারি হয়ে যাচ্ছে। একাকিত্বে চরমভাবে তারাই বুগছে। যেন এই দুনিয়ায় কেউ নেই তার জীবনে। সে চাচ্ছে এই রঙ্গিন আকাশে ডানা মেলে উড়তে। কিন্তু কেন যেন সে পারছে না। সে চাচ্ছে নিজের দক্ষতা দিয়ে কিছু একটা করতে, সেটাও কেন যেন হচ্ছে না। দিন দিন অরুচি, আর অস্বাস্থ্য নিয়ে সে যেন মহা চিন্তিত। না বাবা মা নিচ্ছে সন্তানের কোন খবর। না নিচ্ছে স্কুল টিচাররা। অথচ একটা ছেলে বা মেয়েকে যখন স্কুলে ভর্তি করানো হয় তখন ছেলে মেয়ের দায়িত্বেের ভার যেন তার মা বাবার কাছেই সীমাবদ্ধ না। শিক্ষক, শিক্ষিকার কাছেও চলে যায়। একজন শিক্ষক ও ভালো করে জানেন ছেলে মেয়েরা কি করছে বা করে। কিন্তু এতকিছু জানা সত্যেও কেন তারা ঠেলে দিচ্ছে এই আগুনের দিকে? কেন তারা বুঝেন না একটা জীবনের মানে? কারণ দুইটাঃ একটা হলো আগের মত দায়িত্ববোধ বর্তমানের কোনো শিক্ষক-শিক্ষিকার ভিতরে কাজ করে না। কারণ সবাই তাদের নিজস্ব ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত। যখন একটা ছেলেকে মেবাইল নিয়ে ক্লাসে ঢুকার অনুমতি একজন শিক্ষক দিতে পারে। তাহলে ক্লাসে বসে পড়ার নামে বহুত কিছু করে ফেলা স্বাভাবিক। আর এই কারণের ভিতর দিয়ে শুরু হয় দ্বিতীয় কারণের উৎপত্তি। একজন ছাত্র যখন মোবাইলটা হাতে নিবে সে শুরুতেই ইন্টারনেট চালু করে হয়ত ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, না হয় হোয়াটসঅ্যাপে ইত্যাদিতে সে প্রবেশ করবেই। আর এই দিয়েই শুরু তার (উইনডো) তে প্রবেশ করা। যে কখনো ফোন টিপতে পারত না সেও এখন ডার্ক সাইটের নিয়মিত বড়ো একজন কর্মী হিসেবে কাজ করছে। ভাবতেও লজ্জা লাগে কারণ, এমন একটা সময় এসে পরেছে বর্তমান দুনিয়া যেখানে না নিচ্ছে কেউ কারো খবর না আছে জবাবদিহিতা, না আছে শান্তি। কারণ আমাদের জন্যই এগুলো বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয় কারণঃ সেটা হলো (উইনডো) একবার সে ভিন্ন জগতে পা ফেলেছে কি আর ফিরে আসতে চাইলেও সম্ভব না।
একটা জরিপে জানা গেছে বর্তমান বিশ্বের ১৫-২৫ বছর বয়সের ছেলে মেয়েরা শতকরা ৯৪.৬৭% স্মার্ট ফোন ইউজার। আর এই স্মার্টফোন যেন আমার আপনার জীবনে ডেকে আনছে কাল। দিন দিন যেন ঢলে পরছেন মৃত্যুর কোলে। স্মার্টফোন বর্তমানে এমন এক জিনিস হিসেবে ব্যবহার হয় যেন সে এক মহা মূল্যবান ঔষধ! যেটা আমাদের কাছে না থাকলে যেন আমাদের প্রাণ বাহির হয়ে যায়। তাই প্রতিটি বাবা মায়ের উচিৎ ছেলে মেয়েদের হাতে পর্যন্ত বয়স না হওয়া পর্যন্ত মেবাইল না দেওয়া উচিৎ। নিজের সন্তানসন্ততিদেরকে এভাবে যেন আর ঠেলে দেয়না সমাজের কোনো মা কোনো বাবা। হয়ত আপনি দুনিয়া থেকে চলে যাবেন কিন্তু এই পাপের প্রায়শ্চিত্ত ভুগতে থাকবে আপনার আদরের সন্তানরা। তাই বলি এখন সতর্ক হয়ে যান। অন্যকে সতর্ক করে দেন। এরদ্বারা দেশ ও জাতির উভয়ের কল্যাণ হবে। আর যে মানুষের কল্যাণে অগ্রগামি স্বয়ং আল্লাহ তাঁর পথকে পরিষ্কার করে দিবেন, তার ভবিষ্যৎকে সুন্দর করে দিবেন। সবাই সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন।
মোঃ রায়হান শেখ
সাইবার নিরাপত্তা কর্মী (Individual Cyber Security Help)