মহিপুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম

- আপডেটের সময় : ০৫:৪৯:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৫
- / ৭৪৪
কুয়াকাটা (পটুয়াখালী): পটুয়াখালীর মহিপুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চিকিৎসা সেবা চলছে। এতে প্রতিদিন রোগী ও স্বাস্থ্যকর্মীরা দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকলেও বিকল্প না থাকায় বাধ্য হয়ে সেবা গ্রহণ ও প্রদান করতে হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুইতলা বিশিষ্ট এই ভবনের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। ছাদ ও দেয়াল থেকে খসে পড়ছে নির্মাণ সামগ্রী। ফলে যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর পাশাপাশি জনবল সংকটও চরম আকার ধারণ করেছে।
উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মোট আটটি পদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পাঁচটি পদ শূন্য রয়েছে। মেডিকেল অফিসার, ফার্মাসিস্ট, মিডওয়াইফ, নাইট গার্ড ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী না থাকায় সেবাপ্রত্যাশীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন। বর্তমানে উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা ও অফিস সহায়ক—এই তিনজনের ওপরই পুরো স্বাস্থ্যসেবার দায়িত্ব নির্ভর করছে।
মহিপুর গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘আমাদের ইউনিয়নসহ আশপাশের এলাকা থেকে প্রতিদিন শত শত নারী-পুরুষ, শিশু ও শিক্ষার্থী এ কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসে। দ্রুত সংস্কার না করলে স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।’
ডালবুগঞ্জ থেকে চিকিৎসা নিতে আসা ইব্রাহিম দফাদার বলেন, ‘ভবনের দেয়াল ও ছাদে বড় ফাটল রয়েছে। ইট ও প্লাস্টার খসে পড়ে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবুও চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছি।’
কুয়াকাটা থেকে আসা রোগী রোজিনা বেগম বলেন, ‘ভবনে ঢুকলেই মনে হয় মাথার ওপর ভেঙে পড়বে। কিন্তু বিকল্প না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই চিকিৎসা নিতে হয়।’
পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা নুরজাহান বেগম বলেন, ‘জরাজীর্ণ ভবনের কারণে আমরা আতঙ্কের মধ্যে দায়িত্ব পালন করছি। একাধিক কক্ষ ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বর্ষাকালে ছাদ দিয়ে পানি পড়ে এবং কোথাও কোথাও ভেঙে পড়ে নির্মাণ সামগ্রী। বিষয়টি একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’
উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আবিদা সুলতানা বলেন, ‘ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে এবং কিছু কক্ষে ছাদ থেকে বিভিন্ন অংশ ভেঙে পড়েছে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। জনবল সংকটের কারণে প্রত্যাশিত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, ‘কিছুদিন আগে ইঞ্জিনিয়ার ভবনটি পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে আমি ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি প্রেরণ করেছি। আগামী অক্টোবরে নতুন নিয়োগ সম্পন্ন হলে জনবল সংকটও নিরসন হবে।’
স্থানীয়রা জানান, স্বাস্থ্যসেবার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। তারা অবিলম্বে নতুন ভবন নির্মাণ ও পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগের মাধ্যমে নিরাপদ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জোর দাবি জানিয়েছেন।