ঢাকা ১১:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিক্ষা কর্মকর্তারা চুপচাপ

কলাপাড়ায় শোকজের পরেও নিয়মে ফেরেনি বিদ্যালয়ের কার্যক্রম

মাইনুদ্দিন আল আতিক
  • আপডেটের সময় : ০৮:৩৮:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪
  • / ৬৭৫

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় চর ধুলাসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘শিক্ষার নামে চলছে তামাশা, কাগজে-কলমে ১১৭ শিক্ষার্থী থাকলেও উপস্থিতি ১০-১১ জন’ এমন শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য বিদ্যালয়ে সরেজমিনে পরিদর্শন করেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অচ্যুতানন্দ দাস।

সত্যতা পেয়ে শিক্ষা অফিস থেকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জবাব দিতে বলা হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আল-আমিন বিশ্বাস লিখিত জবাব জমা দিয়েছেন। সেই শোকজের জবাব ঘুরছে শিক্ষা কর্মকর্তাদের টেবিলে টেবিলে।

এদিকে কর্তাব্যক্তিদের আস্থা অর্জনে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রধান শিক্ষক। আর দায়সারা শোকজ করেই চুপচাপ শিক্ষা অফিসের কর্তাব্যক্তিরা। যার ফলে নিয়মে ফেরেনি পাঠদান কার্যক্রম। বিদ্যালয়টিতে যেন অনিয়মই নিয়মে পরিণত হয়েছে।

এ বিষয়ে সংবাদকর্মীরা ফের গত ১১ নভেম্বর সকাল ১০ টায় সরেজমিনে গিয়ে পূর্বের পুনরাবৃত্তি দেখতে পান। এসময় দেখা যায় ৫ জন শিক্ষকের মাত্র ২ জন উপস্থিত রয়েছেন। এর প্রায় আধাঘণ্টা পর আসেন সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন। কারণ জানতে চাইলে স্কুলের কাজে প্রধান শিক্ষকের বাসায় গিয়েছিলেন বলে জানান। এসময় তার ছেলে মিশকাত বিদ্যালয়ে হাজির হয়ে তার বাবাকে কেউ কিছু করতে পারবে না বলে দাম্ভিকতা দেখান।

প্রধান শিক্ষক মো. আল-আমিন বিশ্বাস

জানা গেছে, বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার নামে দীর্ঘদিন ধরে তামাশা চলে আসছে। কাগজে-কলমে ১১৭ জন শিক্ষার্থী থাকলেও ৫-১০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে চলছে পাঠদান কার্যক্রম। প্রধান শিক্ষক আল-আমিন বিশ্বাস, সহকারী শিক্ষিকা আকলিমা ও সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন একই বিদ্যালয়ে দীর্ঘ বছর ধরে কর্মরত রয়েছেন। ফলে তাদের আধিপত্যেই চলছে সব ধরনের অনিয়ম। এছাড়া সহকারী শিক্ষিকা সাওদা ও তানিয়ার বিরুদ্ধেও নিয়মিত ক্লাস না করার অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়টির শিক্ষকদের অশোভন আচরণ, অনুপস্থিতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে এমন পরিস্থিতি। ম্যানেজিং কমিটি কাগজ-কলমেই সীমাবদ্ধ। শিক্ষকরা মনগড়া ও নিজেদের খেয়াল খুশিমতো চালাচ্ছেন বিদ্যালয়।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অচুত্যানন্দ দাশ বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের শোকজের জবাব জেলায় পাঠানো হয়েছে। অন্য কোনো শিক্ষক অনিয়ম করলে তাকেও শোকজ করে কৈফিয়ত তলব করা হবে।’

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ বখতিয়ার বাংলাদেশ সমাচারকে বলেন, ‘শোকজের জবাব পেয়েছি। সেটি পর্যালোচনার জন্য বরিশালে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’



নিউজটি শেয়ার করুন



শিক্ষা কর্মকর্তারা চুপচাপ

কলাপাড়ায় শোকজের পরেও নিয়মে ফেরেনি বিদ্যালয়ের কার্যক্রম

আপডেটের সময় : ০৮:৩৮:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় চর ধুলাসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘শিক্ষার নামে চলছে তামাশা, কাগজে-কলমে ১১৭ শিক্ষার্থী থাকলেও উপস্থিতি ১০-১১ জন’ এমন শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য বিদ্যালয়ে সরেজমিনে পরিদর্শন করেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অচ্যুতানন্দ দাস।

সত্যতা পেয়ে শিক্ষা অফিস থেকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জবাব দিতে বলা হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আল-আমিন বিশ্বাস লিখিত জবাব জমা দিয়েছেন। সেই শোকজের জবাব ঘুরছে শিক্ষা কর্মকর্তাদের টেবিলে টেবিলে।

এদিকে কর্তাব্যক্তিদের আস্থা অর্জনে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রধান শিক্ষক। আর দায়সারা শোকজ করেই চুপচাপ শিক্ষা অফিসের কর্তাব্যক্তিরা। যার ফলে নিয়মে ফেরেনি পাঠদান কার্যক্রম। বিদ্যালয়টিতে যেন অনিয়মই নিয়মে পরিণত হয়েছে।

এ বিষয়ে সংবাদকর্মীরা ফের গত ১১ নভেম্বর সকাল ১০ টায় সরেজমিনে গিয়ে পূর্বের পুনরাবৃত্তি দেখতে পান। এসময় দেখা যায় ৫ জন শিক্ষকের মাত্র ২ জন উপস্থিত রয়েছেন। এর প্রায় আধাঘণ্টা পর আসেন সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন। কারণ জানতে চাইলে স্কুলের কাজে প্রধান শিক্ষকের বাসায় গিয়েছিলেন বলে জানান। এসময় তার ছেলে মিশকাত বিদ্যালয়ে হাজির হয়ে তার বাবাকে কেউ কিছু করতে পারবে না বলে দাম্ভিকতা দেখান।

প্রধান শিক্ষক মো. আল-আমিন বিশ্বাস

জানা গেছে, বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার নামে দীর্ঘদিন ধরে তামাশা চলে আসছে। কাগজে-কলমে ১১৭ জন শিক্ষার্থী থাকলেও ৫-১০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে চলছে পাঠদান কার্যক্রম। প্রধান শিক্ষক আল-আমিন বিশ্বাস, সহকারী শিক্ষিকা আকলিমা ও সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন একই বিদ্যালয়ে দীর্ঘ বছর ধরে কর্মরত রয়েছেন। ফলে তাদের আধিপত্যেই চলছে সব ধরনের অনিয়ম। এছাড়া সহকারী শিক্ষিকা সাওদা ও তানিয়ার বিরুদ্ধেও নিয়মিত ক্লাস না করার অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়টির শিক্ষকদের অশোভন আচরণ, অনুপস্থিতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে এমন পরিস্থিতি। ম্যানেজিং কমিটি কাগজ-কলমেই সীমাবদ্ধ। শিক্ষকরা মনগড়া ও নিজেদের খেয়াল খুশিমতো চালাচ্ছেন বিদ্যালয়।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অচুত্যানন্দ দাশ বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের শোকজের জবাব জেলায় পাঠানো হয়েছে। অন্য কোনো শিক্ষক অনিয়ম করলে তাকেও শোকজ করে কৈফিয়ত তলব করা হবে।’

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ বখতিয়ার বাংলাদেশ সমাচারকে বলেন, ‘শোকজের জবাব পেয়েছি। সেটি পর্যালোচনার জন্য বরিশালে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’