নড়াইলে ফ্রিল্যান্সিংয়ে গৃহবধু প্রিয়াঙ্কার বাজিমাত!

- আপডেটের সময় : ১১:৪৯:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর ২০২৩
- / ৬৬৬
নড়াইল জেলা প্রতিনিধি : পড়াশোনা ও সংসারের ফাঁকে ফ্রিল্যান্সিং করে যে একজন সফল উদ্দ্যোক্তা হওয়া যায় তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত নড়াইলের প্রিয়াঙ্কা গাইন। স্বামীর কাছ থেকে কাজ শিখে ফ্রিল্যান্সিং করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন নড়াইল পৌরসভার আলাদাতপুর এলাকার এই গৃহবধূ। প্রতি মাসে এখন তাঁর আয় প্রায় ৮ লাখ টাকা। নিজের আয়ের অর্থ দিয়ে কিনেছেন শখের গাড়ি। জমি কিনে সেখানে করছেন বাড়ি। ফ্রিল্যান্সিংয়ে অবদান রাখায় পেয়েছেন একাধিক অ্যাওয়ার্ড ।
প্রিয়াঙ্কা গাইন বলেন, তাঁর স্বামী মোহন কুন্ডু আগে থেকেই ফ্রিল্যান্সিং করতেন। তবে এ কাজে তেমন আগ্রহ ছিলো না তাঁর। কিন্তু স্বামীর অনুরোধে ফ্রিল্যান্সিংয়ে আগ্রহী হন প্রিয়াঙ্কা। একপর্যায়ে ২০১৩ সালের দিকে স্বামীর থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেন । সে সময় পরিবারের নানা কাজ সামলে ফ্রিল্যান্সিংয়ের সময় বের করা ছিল ভীষণ কঠিন। তবে হাল ছাড়েন নি। স্বামী নিজেই তাঁর প্রশিক্ষক হওয়ায় এবং পরিবারের সকলের সহযোগিতা থাকায় এগিয়ে যেতে থাকেন। তাঁর ক্যারিয়ারের যাত্রা শুরু হয় মাত্র ৭ ডলারের একটি কাজ দিয়ে। এখন তিনি প্রতি মাসে আয় করছেন প্রায় আট লাখ টাকা। যদিও কোন মাসে কম আবার কোন মাসে বেশিও আয় করেন। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ফ্রিল্যান্সিং থেকে তার মোট আয়ের পরিমাণ তিন কোটির কাছাকাছি। নিজের আয় দিয়ে ইতোমধ্যে ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে কিনেছেন একটি শখের গাড়ি। জমি কিনে সেখানে তৈরি করছেন বাড়ি।
ফ্রিল্যান্সিংয়ে অবদান রাখায় টপউইমেন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ন্যাশনাল টেক অ্যাওয়ার্ড ২০২৩, খুলনা বিভাগ থেকে টপউইমেন ফ্রিল্যান্সার অ্যাওয়ার্ড ও নড়াইল জেলার সেরা নারী ফ্রিল্যান্সার সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। ভবিষ্যতে নিজ জেলার ফ্রিল্যান্সিংয়ে আগ্রহীদের নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে তার।
প্রিয়াঙ্কার স্বামী মোহন কুন্ডু বলেন, ২০১১ সালে ফুফাতো ভাইয়ের কাছ থেকে ফ্রিল্যান্সিং শিখে এই পেশায় আসেন। তখন থেকে প্রিয়াঙ্কাকে ফ্রিল্যান্সিং করতে উদ্বুদ্ধ করেন। কাজ শেখাতে থাকেন। পরে আস্তে আস্তে ইনকাম করতে শুরু করে প্রিয়াঙ্কা। আর স্ত্রীর পাশে থেকে সবসময় সাহায্য করেন তিনি। শুধু তিনি নয় বাসার সকলেই সাহায্য ও সমর্থন করেন প্রিয়াঙ্কাকে। স্ত্রীর এমন সাফল্যে গর্বিত তিনি।
প্রিয়াঙ্কার শ্বশুর-শাশুড়ি বলেন, পড়ালেখার পাশাপাশি ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিংয়ে কাজে শুরু থেকেইে তাদের সমর্থন রয়েছে। পুত্রবধূর সাফল্য গর্বিত তারা। তারা মনে করেন এই কাজে কোন পরিবারেরই আপত্তি করা উচিত না। কারণ আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে ফ্রিল্যান্সিংয়ের ভূমিকাটা অনেক বড়।
বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি নড়াইল জেলা শাখার সভাপতি প্রসেনজিৎ কুন্ডু বলেন, ফ্রিল্যান্সিং করে নারীরা যে এখন ঘরে বসে অর্থ আয় করতে পারে তারই অনন্য উদাহরণ প্রিয়াঙ্কা গাইন। প্রিয়াঙ্কার সফলতা দেখে আরো অনেকেই ফ্রিল্যান্সিংয়ে আগ্রহী হবেন। দিন দিন অনলাইনে মার্কেটপ্লেস বৃদ্ধির সাথে সাথে ফ্রিল্যান্সারদের চাহিদাও বাড়ছে। এই খাতে মানুষ আগ্রহী হলে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে যেমন নিজেদের সমৃদ্ধ করবে তেমনি দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে।