ঢাকা ০৭:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কলাপাড়ায় প্রায় ঘরে ঘরেই করোনা উপসর্গ, আগ্রহ নেই টেস্টে!

নিউজ রুম
  • আপডেটের সময় : ০৫:০৫:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই ২০২১
  • / ১০৯৭

কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ফাইল ফটো

রিপোর্ট- মাইনুদ্দিন আল আতিক : পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে জ্বর-সর্দি-কাশি-মাথাব্যথায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। উপজেলার প্রায় ঘরে ঘরেই এখন এ ধরনের রোগী। আক্রান্ত হচ্ছেন শিশুসহ সব বয়সের মানুষ। অনেকের আবার শরীরে তীব্র ব্যথা দেখা দিয়েছে। রয়েছে খাবারের অরুচির মত লক্ষণ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন উপজেলার বেশিরভাগ বাড়িতেই কেউ না কেউ জ্বর-কাশিতে আক্রান্ত। তাদের বেশিরভাগই বিভিন্ন ফার্মেসি থেকে উপসর্গের কথা বলে ওষুধ কিনে কিংবা গ্রাম ডাক্তারদের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করছেন। এভাবে ইতোমধ্যে অনেকে সুস্থ হয়েও উঠেছেন। আবার কেউ কেউ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে গিয়েও চিকিৎসা নিচ্ছেন।

উপজেলার ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল মালেক হাং জানান, তার গত ২/৩ দিন যাবৎ জ্বর-মাথাব্যথা। সাথে কাশি ও গা ব্যথা রয়েছে। স্থানীয় গ্রাম ডাক্তারের কাছ থেকে ওষুধ এনে খেয়ে তিনি এখন মোটামুটি সুস্থ।

লতাচাপলী ইউনিয়নের এক গৃহবধূ নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গত ৪/৫ দিন ধরে তার জ্বর-কাশি। গ্রাম ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ সেবনে কিছুটা উন্নতি হলেও এখনও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেননি তিনি।

মহিপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, কয়েকদিন আগে তার জ্বর আসে। এতে বাজারের একটি ফার্মেসিতে গিয়ে উপসর্গের কথা বলে অ্যান্টিবায়োটিক, প্যারাসিটামলসহ আরও কয়েকটি ওষুধ কিনে খেয়েছেন। এখন আর জ্বর নেই। তবে তার শরীর খুব দুর্বল।

এ ব্যাপারে কথা হয় গ্রামীণ জনপদের কয়েকজন গ্রাম ডাক্তারের সাথে। তারা জানান, গ্রামগঞ্জে সর্দি-কাশি-জ্বরের রোগী ব্যাপক বেড়েছে, বেড়েছে ওষুধ বিক্রিও। এ অবস্থায় তারা মনে করছেন, এখন ঘরে ঘরে জ্বর-কাশি। এ ধরনের বেশিরভাগ রোগী বা রোগীর স্বজন হাসপাতালে না গিয়ে তাদের কাছে এসে উপসর্গের কথা বলে ওষুধ নিয়ে সেবন করছেন। তবে জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর বেশিরভাগ রোগীই মারাত্মক দুর্বল হয়ে পড়ছেন।

এদিকে উপজেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এনিয়ে সচেতন মহলে আতঙ্ক বিরাজ করলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে নেই সচেতনতার কোনো ছিটে ফোঁটাও। এমনকি সরকারের দেয়া কঠোর লকডাউনেও বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায় তাদের। এছাড়া জ্বর-সর্দি-কাশিসহ করোনার লক্ষণ থাকলেও টেস্ট নিয়ে তেমন কোনো আগ্রহ নেই অনেকের মাঝে। আবার কেউ কেউ ভয়ে করাচ্ছেন না করোনা টেস্ট। জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা মনে করছেন, করোনা হোক আর সাধারণ জ্বর হোক, তা সাধারণ চিকিৎসাতেই ভালো হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ অনুপ কুমার সরকার ধ্রুববাণীকে বলেন, ‘উপজেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপক বেড়েছে। এছাড়াও করোনার উপসর্গ যেমন- সর্দি, কাশি, জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। তবে টেস্ট করলে দেখা যায় এদের মধ্যে বেশিরভাগ রোগীই করোনায় আক্রান্ত। এর কারণ হচ্ছে, গ্রামগঞ্জের অধিকাংশ মানুষ এখনও অসচেতন। তারা স্বাস্থ্যবিধি মানতে নারাজ। ফলে দিন দিন করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলছে। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জার সংক্রমণ বেশি থাকে। তাই এসময় অন্য সময়ের চেয়ে জ্বর, সর্দি, কাশিতে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে মানুষ।’

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সবাইকে সরকারের দেয়া কঠোর লকডাউনসহ বিধিনিষেধ ও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মানতে পরামর্শ দিয়েছেন এই চিকিৎসক।



নিউজটি শেয়ার করুন








কলাপাড়ায় প্রায় ঘরে ঘরেই করোনা উপসর্গ, আগ্রহ নেই টেস্টে!

আপডেটের সময় : ০৫:০৫:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই ২০২১

রিপোর্ট- মাইনুদ্দিন আল আতিক : পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে জ্বর-সর্দি-কাশি-মাথাব্যথায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। উপজেলার প্রায় ঘরে ঘরেই এখন এ ধরনের রোগী। আক্রান্ত হচ্ছেন শিশুসহ সব বয়সের মানুষ। অনেকের আবার শরীরে তীব্র ব্যথা দেখা দিয়েছে। রয়েছে খাবারের অরুচির মত লক্ষণ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন উপজেলার বেশিরভাগ বাড়িতেই কেউ না কেউ জ্বর-কাশিতে আক্রান্ত। তাদের বেশিরভাগই বিভিন্ন ফার্মেসি থেকে উপসর্গের কথা বলে ওষুধ কিনে কিংবা গ্রাম ডাক্তারদের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করছেন। এভাবে ইতোমধ্যে অনেকে সুস্থ হয়েও উঠেছেন। আবার কেউ কেউ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে গিয়েও চিকিৎসা নিচ্ছেন।

উপজেলার ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল মালেক হাং জানান, তার গত ২/৩ দিন যাবৎ জ্বর-মাথাব্যথা। সাথে কাশি ও গা ব্যথা রয়েছে। স্থানীয় গ্রাম ডাক্তারের কাছ থেকে ওষুধ এনে খেয়ে তিনি এখন মোটামুটি সুস্থ।

লতাচাপলী ইউনিয়নের এক গৃহবধূ নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গত ৪/৫ দিন ধরে তার জ্বর-কাশি। গ্রাম ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ সেবনে কিছুটা উন্নতি হলেও এখনও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেননি তিনি।

মহিপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, কয়েকদিন আগে তার জ্বর আসে। এতে বাজারের একটি ফার্মেসিতে গিয়ে উপসর্গের কথা বলে অ্যান্টিবায়োটিক, প্যারাসিটামলসহ আরও কয়েকটি ওষুধ কিনে খেয়েছেন। এখন আর জ্বর নেই। তবে তার শরীর খুব দুর্বল।

এ ব্যাপারে কথা হয় গ্রামীণ জনপদের কয়েকজন গ্রাম ডাক্তারের সাথে। তারা জানান, গ্রামগঞ্জে সর্দি-কাশি-জ্বরের রোগী ব্যাপক বেড়েছে, বেড়েছে ওষুধ বিক্রিও। এ অবস্থায় তারা মনে করছেন, এখন ঘরে ঘরে জ্বর-কাশি। এ ধরনের বেশিরভাগ রোগী বা রোগীর স্বজন হাসপাতালে না গিয়ে তাদের কাছে এসে উপসর্গের কথা বলে ওষুধ নিয়ে সেবন করছেন। তবে জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর বেশিরভাগ রোগীই মারাত্মক দুর্বল হয়ে পড়ছেন।

এদিকে উপজেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এনিয়ে সচেতন মহলে আতঙ্ক বিরাজ করলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে নেই সচেতনতার কোনো ছিটে ফোঁটাও। এমনকি সরকারের দেয়া কঠোর লকডাউনেও বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায় তাদের। এছাড়া জ্বর-সর্দি-কাশিসহ করোনার লক্ষণ থাকলেও টেস্ট নিয়ে তেমন কোনো আগ্রহ নেই অনেকের মাঝে। আবার কেউ কেউ ভয়ে করাচ্ছেন না করোনা টেস্ট। জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা মনে করছেন, করোনা হোক আর সাধারণ জ্বর হোক, তা সাধারণ চিকিৎসাতেই ভালো হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ অনুপ কুমার সরকার ধ্রুববাণীকে বলেন, ‘উপজেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপক বেড়েছে। এছাড়াও করোনার উপসর্গ যেমন- সর্দি, কাশি, জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। তবে টেস্ট করলে দেখা যায় এদের মধ্যে বেশিরভাগ রোগীই করোনায় আক্রান্ত। এর কারণ হচ্ছে, গ্রামগঞ্জের অধিকাংশ মানুষ এখনও অসচেতন। তারা স্বাস্থ্যবিধি মানতে নারাজ। ফলে দিন দিন করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলছে। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জার সংক্রমণ বেশি থাকে। তাই এসময় অন্য সময়ের চেয়ে জ্বর, সর্দি, কাশিতে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে মানুষ।’

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সবাইকে সরকারের দেয়া কঠোর লকডাউনসহ বিধিনিষেধ ও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মানতে পরামর্শ দিয়েছেন এই চিকিৎসক।