ঢাকা ০৫:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পায়রা বন্দরের উন্নয়ন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

নিউজ রুম
  • আপডেটের সময় : ০৭:৩৯:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫
  • / ৫৯৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বন্দরের উন্নয়ন, অগ্রগতি, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও সম্ভাবনা নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (২৫ জুন) সকাল ১০টায় পায়রা বন্দরের পিপিএফটি টার্মিনাল ভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাসুদ ইকবাল। সভায় অংশ নেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, ব্যবসায়ী সংগঠন, বন্দর ব্যবহারকারী অংশীজন এবং ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার প্রতিনিধিরা।

সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন বন্দর সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘পায়রা বন্দর প্রতিষ্ঠার পর দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতি ও জীবনমানে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে।’

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) কমডোর মোহাম্মদ আব্দুল কাদের। তিনি বন্দরের কাঠামোগত উন্নয়ন, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন। এসময় একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

সভায় বক্তব্য দেন মোংলা, পায়রা, পানগাঁও ও ল্যান্ড পোর্ট পরিচালক সুমন হাওলাদার, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টসের সভাপতি মো. মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক মামুনুর রশিদ ও কলাপাড়া প্রেসক্লাব সভাপতি মো. হুমায়ুন কবির প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, পায়রা বন্দর দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠছে। তাই অবকাঠামো উন্নয়ন, দক্ষ জনবল তৈরি, পরিবেশ রক্ষা ও টেকসই উন্নয়নের ওপর জোর দেন তারা। সভায় অংশগ্রহণকারীরা স্থানীয় জনসম্পৃক্ততা, কর্মসংস্থান, সড়ক ও রেল যোগাযোগ এবং পরিবেশবান্ধব কার্যক্রমের বিষয়ে মতামত ও সুপারিশ তুলে ধরেন।

সমাপনী বক্তব্যে চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাসুদ ইকবাল বলেন, ‘পায়রা বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন, আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। স্থানীয় অংশীজনদের মতামত আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি বলেন, ‘২০২৬ সালের জুলাইয়ের মধ্যে বন্দরের প্রথম টার্মিনাল পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হবে। এ পর্যন্ত বন্দরটি ৫২৯টি বৈদেশিক ও ৩৪২৬টি দেশীয় লাইটারেজ জাহাজ হ্যান্ডল করেছে, যার মাধ্যমে সরকার প্রায় ২০৭৯ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে।’

চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ছয় লেনের মহাসড়ক উন্নয়ন কাজ দ্রুত শুরু হচ্ছে। বন্দর পুরোপুরি চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলে বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।’

অনুষ্ঠানে পায়রা বন্দরে দেশের দীর্ঘতম ৬৫০ মিটার বার্থসহ আধুনিক জেটি, ৩,২৫,০০০ বর্গমিটার ব্যাকআপ ইয়ার্ড, ১০,০০০ বর্গমিটার আধুনিক সিএফএস শেড, নিরাপদ গভীর চ্যানেল, ৩০০০-৩৫০০ টিইইউ ধারণক্ষম কন্টেইনারবাহী জাহাজ চলাচল সক্ষমতা, যানজটমুক্ত পরিবহন সুবিধা, ঢাকায় ৪ ঘণ্টায় পণ্য পৌঁছানোর সম্ভাবনা, স্বয়ংক্রিয় অপারেশন ব্যবস্থা এবং সাশ্রয়ী ট্যারিফ সুবিধার কথা তুলে ধরা হয়।

সভা শেষে চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাসুদ ইকবাল সকল অংশীজনের পায়রা বন্দরের অগ্রযাত্রায় সক্রিয় সহযোগিতার আহ্বান জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পায়রা বন্দরকে দেশের অন্যতম অর্থনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।



নিউজটি শেয়ার করুন








পায়রা বন্দরের উন্নয়ন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

আপডেটের সময় : ০৭:৩৯:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বন্দরের উন্নয়ন, অগ্রগতি, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও সম্ভাবনা নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (২৫ জুন) সকাল ১০টায় পায়রা বন্দরের পিপিএফটি টার্মিনাল ভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাসুদ ইকবাল। সভায় অংশ নেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, ব্যবসায়ী সংগঠন, বন্দর ব্যবহারকারী অংশীজন এবং ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার প্রতিনিধিরা।

সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন বন্দর সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘পায়রা বন্দর প্রতিষ্ঠার পর দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতি ও জীবনমানে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে।’

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) কমডোর মোহাম্মদ আব্দুল কাদের। তিনি বন্দরের কাঠামোগত উন্নয়ন, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন। এসময় একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

সভায় বক্তব্য দেন মোংলা, পায়রা, পানগাঁও ও ল্যান্ড পোর্ট পরিচালক সুমন হাওলাদার, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টসের সভাপতি মো. মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক মামুনুর রশিদ ও কলাপাড়া প্রেসক্লাব সভাপতি মো. হুমায়ুন কবির প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, পায়রা বন্দর দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠছে। তাই অবকাঠামো উন্নয়ন, দক্ষ জনবল তৈরি, পরিবেশ রক্ষা ও টেকসই উন্নয়নের ওপর জোর দেন তারা। সভায় অংশগ্রহণকারীরা স্থানীয় জনসম্পৃক্ততা, কর্মসংস্থান, সড়ক ও রেল যোগাযোগ এবং পরিবেশবান্ধব কার্যক্রমের বিষয়ে মতামত ও সুপারিশ তুলে ধরেন।

সমাপনী বক্তব্যে চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাসুদ ইকবাল বলেন, ‘পায়রা বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন, আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। স্থানীয় অংশীজনদের মতামত আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি বলেন, ‘২০২৬ সালের জুলাইয়ের মধ্যে বন্দরের প্রথম টার্মিনাল পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হবে। এ পর্যন্ত বন্দরটি ৫২৯টি বৈদেশিক ও ৩৪২৬টি দেশীয় লাইটারেজ জাহাজ হ্যান্ডল করেছে, যার মাধ্যমে সরকার প্রায় ২০৭৯ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে।’

চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ছয় লেনের মহাসড়ক উন্নয়ন কাজ দ্রুত শুরু হচ্ছে। বন্দর পুরোপুরি চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলে বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।’

অনুষ্ঠানে পায়রা বন্দরে দেশের দীর্ঘতম ৬৫০ মিটার বার্থসহ আধুনিক জেটি, ৩,২৫,০০০ বর্গমিটার ব্যাকআপ ইয়ার্ড, ১০,০০০ বর্গমিটার আধুনিক সিএফএস শেড, নিরাপদ গভীর চ্যানেল, ৩০০০-৩৫০০ টিইইউ ধারণক্ষম কন্টেইনারবাহী জাহাজ চলাচল সক্ষমতা, যানজটমুক্ত পরিবহন সুবিধা, ঢাকায় ৪ ঘণ্টায় পণ্য পৌঁছানোর সম্ভাবনা, স্বয়ংক্রিয় অপারেশন ব্যবস্থা এবং সাশ্রয়ী ট্যারিফ সুবিধার কথা তুলে ধরা হয়।

সভা শেষে চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাসুদ ইকবাল সকল অংশীজনের পায়রা বন্দরের অগ্রযাত্রায় সক্রিয় সহযোগিতার আহ্বান জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পায়রা বন্দরকে দেশের অন্যতম অর্থনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।