ঠাকুরগাঁওয়ে মাছ উৎপাদনে ঘাটতি ৬৫৫৫ মেট্রিক টন

- আপডেটের সময় : ০৯:১১:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ অগাস্ট ২০২১
- / ৬১৯
মোঃ আকতারুল ইসলাম আক্তার, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি: কথায় আছে মাছে ভাতে বাঙ্গালী। তাই বাংলাদেশে মাছের চাহিদাও একটু বেশি। তবে মাছ উৎপাদনে দেশ স্বয়ংসম্পন্ন হলেও ঠাকুরগাঁও জেলায় মাছ উৎপাদনে ৬৫৫৫ মেট্রিক টন ঘাটতি রয়েছে।
ফলে আমিষের সংকট নিরসনে এ জেলা অন্য জেলার উপরে নির্ভরশীল হয়ে পরছে। এর প্রভাবে স্থানীয় বাজারে মাছের দামও একটু বেশি থাকে। তাই আমিষের অভাবে নিম্ম শ্রেনীর মানুষের স্বাস্থ্য সমস্যা দিন দিন বাড়ছে।
জেলায় অতী খরা ও বন্যার প্রবণতা। জলবায়ুর পরিবর্তনে নদী, নালা, খাল, বিলে পানি না থাকায় মাছের এ ঘাটতি দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন মৎস্য বিভাগ।
ঠাকুরগাঁও মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলায় প্রায় ১৫ লাখ মানুষের বসবাস। শিশু ও প্রাপ্ত বয়স্ক মিলে একজন মানুষের গড়ে প্রতিদিন মাছের চাহিদা ৬০ গ্রাম। সেই হিসাবে একজন মানুষের প্রতিবছর মাছের চাহিদা প্রায় ২২ কেজি। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী মাছ খেতে পারছেন না এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষ। ফলে সারা বছরই মাছের ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।
জানাগেছে, গত অর্থ বছরে এ জেলার মাছের চাহিদা ছিলো ৩৫ হাজার ৬৯৮ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে উৎপাদন হয়েছে ২৯ হাজার ১৪৩ মেট্রিক টন। সেই হিসেবে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে ৬ হাজার ৫৫৫ মেট্রিক টন।
সূত্র মতে ঠাকুরগাঁওয়ে ১৭ টি নদী, সরকারি-বেসরকারি খাল-বিল প্রায় ৬৫২.১২ হেক্টর, ১৫৮৬০ টি পুকুরে ৫৩ হাজার ০৩.৬০ হেক্টর জমিতে মাছ চাষ হয়। এ ছাড়া বর্ষাকালে ১৩ হাজার ৫৫০ হেক্টর প্লাবন ভূমিতে মাছ চাষ হয়।
মৎস্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের সৃষ্টি পরিবেশগত পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতিতে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় জলাশয়গুলোতে পড়েছে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব। ফলে মাছ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এ অঞ্চলে অতীতে ৩০০ প্রজাতির মাছের নিরাপদ আশ্রয়স্থল ছিল। কালের বিবর্তনে জলবায়ুর পরিবর্তন ও পরিবেশগত কারণে প্রায় ১৩৭ প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির পথে। এ ছাড়া অর্ধশত প্রজাতির মাছ এ অঞ্চল থেকে হারিয়ে গেছে। ফলে এ অঞ্চলের মানুষের মাছের অপর্যাপ্ততায় আমিষ জাতীয় খাদ্যের অভাবে স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
ঠাকুরগাঁও মৎস্য অধিদফতরের জেলা মৎস কর্মকর্তা মো. খালিদুজ্জামান বলেন, এই অঞ্চলে মাছের ঘাটতি পূরণে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মৎস্য অভয়াশ্রম সংরক্ষণ ও মেরামত, সম্প্রসারণ কার্যক্রম চলছে। এই সকল প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন হলে এ অঞ্চলে মাছের ঘাটতি কমে যাবে।