সন্তানদের জন্য বাঁচতে চান ক্যান্সারে আক্রান্ত ইয়াসিন

- আপডেটের সময় : ১০:৫২:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
- / ৫৫৫
মহিপুর (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ জীবনের সঙ্গে তিন বছর ধরে লড়ে যাচ্ছেন ইয়াসিন (৩০)। মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত এই তরুণ এখন সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে বাঁচতে চান। কিন্তু চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে না পেরে থমকে গেছে তাঁর চিকিৎসা। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে ইয়াসিনের এখন একটাই আকুতি— ‘আরও কিছুদিন বাঁচতে চাই, সন্তানদের জন্য।’
পটুয়াখালীর মহিপুর থানাধীন লতাচাপলী ইউনিয়নের মম্বিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ইয়াসিনের সংসারে মা, স্ত্রী ও তিন সন্তান। কয়েক বছর আগে মারা গেছেন বাবা। বেড়িবাঁধের বাইরে বনভূমির পাশে ছোট্ট একটি টিনের ঘরে এখন চলছে তাদের মানবেতর জীবন।
তিন বছর ধরে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে ক্যান্সারের চিকিৎসা নিচ্ছেন ইয়াসিন। চিকিৎসা ও ওষুধের পেছনে যা ছিল সব বিক্রি হয়ে গেছে অনেক আগেই। এখন চিকিৎসা চালিয়ে যেতে প্রয়োজন প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা, যা জোগাড় করা তার পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না।
ইয়াসিন বলেন, ‘দীর্ঘ তিন বছর ধরে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়ছি। অনেক সময় টাকার অভাবে ওষুধ বন্ধ রাখতে হয়। ডাক্তার বলেছেন নিয়মিত চিকিৎসা না হলে অবস্থা আরও খারাপ হবে। কিন্তু এখন সব বিক্রি হয়ে গেছে— ঘরটুকুই শেষ সম্বল। আমার তিনটা সন্তান, স্ত্রী আর মা— ওদের মুখের দিকে তাকিয়ে বাঁচতে চাই। সমাজের দয়ালু মানুষগুলো যদি একটু সহায়তা করতেন, আমি হয়তো আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারতাম।’
স্থানীয় বাসিন্দা সোহবাব বলেন, ‘ইয়াসিন একসময় খুব পরিশ্রমী মানুষ ছিলেন। অসুস্থ হওয়ার পর সব শেষ হয়ে গেছে। এখন মা, স্ত্রী আর সন্তানদের নিয়ে চরম দুর্ভোগে দিন কাটছে তাদের। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে আবার নতুন করে শুরু করতে পারবেন ইয়াসিন।’
মা কহিনূর বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ছেলেটা বাঁচুক— এই আশাতেই বেঁচে আছি। সব বিক্রি করে চিকিৎসা করিয়েছি, এখন ঘরে খাওয়ারও কিছু নাই। কেউ যদি একটু সাহায্য করত, আমার ছেলেটা হয়তো বেঁচে যেত।’
স্ত্রী সাথী বেগমের আকুতি, ‘তিনটা ছোট সন্তান নিয়ে কীভাবে দিন পার করছি, তা বলার নয়। স্বামীর চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে টাকার অভাবে। সমাজের ভালো মানুষদের কাছে অনুরোধ— আমাদের দিকে একবার তাকান।’
মেয়ে লামিয়া, বয়স মাত্র দশ, ফিসফিসিয়ে বলে, ‘আমার আব্বু খুব অসুস্থ। কেউ যদি একটু সাহায্য করত, আমরা আবার চিকিৎসা করাতে পারতাম।’
লতাচাপলী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘ইয়াসিন খুবই পরিশ্রমী মানুষ ছিলেন। অসুস্থতার পর পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়েছে। সমাজের বিত্তবানদের উচিত এ পরিবারের পাশে দাঁড়ানো।’
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাওছার হামিদ বলেন, ‘স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিক সহযোগিতার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সমাজসেবা অধিদপ্তর ও ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।’
জীবন-মৃত্যুর সীমারেখায় দাঁড়িয়ে ইয়াসিন এখন কেবল সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভাবছেন। সমাজের মানবিক মানুষদের প্রতি তার বিনীত আবেদন— ‘একটু সহায়তা করলে হয়তো আমি আমার সন্তানদের মুখে আবার হাসি ফিরিয়ে দিতে পারব।’
যোগাযোগ (সহায়তার জন্য):
মো. ইয়াসিন (নিজ): 📞 01890084147 (বিকাশ)