ঢাকা ০৪:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টিকটক বানাতে গিয়ে হত্যা, সাদা জুতা দেখে সনাক্ত খুনি

নিউজ রুম
  • আপডেটের সময় : ০৬:৪৩:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৮১৭

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পটুয়াখালীতে টিকটক বানাতে গিয়ে সদর উপজেলার ইটবাড়িয়া ইউনিয়নের মো. জাফর ফকিরের ছেলে অটোরিকশা চালক মহিউদ্দিন ঈসাকে হত্যা করা হয়েছে। পরে একজোড়া সাদা জুতা আর সিসি টিভি ফুটেজে বেরিয়ে আসে মহিউদ্দীন ঈসা হত্যার গুরুত্বপূর্ণ ক্লু। পুলিশ সুপারের বুদ্ধিমত্তা তদন্তের ফলে অবশেষে গ্রেফতার হয় হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী মো. তুহিন (২২) ও নাহিদ (১৪)।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ২ টা ৩০ মিনিটের সময় পুলিশ কনফারেন্স রুমে প্রেস ব্রিফিং এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ। এ হত্যাকাণ্ড চাঞ্চল্যেকর সৃষ্টি হওয়ায় পুলিশ তদন্তে বেরিয়ে  আসে। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায় মহিউদ্দিন ঈসার অটোরিকশায় সাদা জুতা ব্যবহারকারীকে। এই জুতার সূত্র ধরে সত্যের সন্ধানের তদন্তে এগিয়ে যায় পুলিশ।

স্থানীয়দের সহযোগিতায় এমন জুতার সন্ধান মেলে বরগুনার আমতলী উপজেলার মহিষকাটা কালীবাড়ি গ্রামের নাহিদ (১৪) নামে এক কিশোরের পায়ে। তার নানা বাড়ি পটুয়াখালী সদরের ইটবাড়িয়া শরিক খালি গ্রামে। সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। তার স্বীকারোক্তি ও জবানবন্দির প্রেক্ষিতে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী মো. তুহিনকেও ঢাকার কাফরুল এলাকা থেকে  গ্রেফতার করা হয়।

জানা গেছে, গত ৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টার দিকে মহিউদ্দিন ঈসা তার অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। তখন পরিকল্পনা অনুযায়ী তুহিন ও নাহিদ ঈসাকে টিকটক ভিডিও বানানোর কথা বলে দশমিনা উপজেলার চাঁদপুরা গ্রামে তরমুজ খেতে নিয়ে যায়। বিভিন্ন কথা বলার মধ্যে হঠাৎ করে ঈসার কাছে ৩০০ টাকা দাবি করে তুহিন ও নাহিদ। ঈসা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে তুহিন ধারালো দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপ দেয় ঈসার শরীরে, আর নাহিদ ঈসার দুই পা চেপে ধরে রেখে জবাই করে। ঈসার মৃত্যু নিশ্চিত করে খড়কুটো দিয়ে মরদেহ ঢেকে রেখে, অটোরিকশাটি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু অটোরিকশাটির চাবি না পেয়ে পালিয়ে যায় তুহিন ও নাহিদ। এসময় ভিকটিমের মোবাইলফোনটি পুকুরে ফেলে দেয় ঘাতকরা।

ঘটনার পর নানা তথ্য সংগ্রহ এবং তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে সিসিটিভি ফুটেজ, সাদা জুতার সন্ধান ও স্থানীয় সূত্রের মাধ্যমে পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সনাক্ত করে। ১৫ ফেব্রুয়ারি মো. নাহিদকে গ্রেফতার করা হয় এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। সেই জবানবন্দির পর ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার কাফরুল এলাকা থেকে মো. তুহিনকে গ্রেফতার করা হয়। তুহিন আদালতে স্বীকার করেছেন যে, তারা অটো চুরি করার জন্য ঈসাকে হত্যা করেছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো দা, ঈসার মোবাইলফোন এবং রক্তমাখা জুতা উদ্ধার করা হয়েছে।

এই হত্যাকান্ডের আসামিদেরকে গ্রেপ্তার করার জন্য যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ।



নিউজটি শেয়ার করুন








টিকটক বানাতে গিয়ে হত্যা, সাদা জুতা দেখে সনাক্ত খুনি

আপডেটের সময় : ০৬:৪৩:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পটুয়াখালীতে টিকটক বানাতে গিয়ে সদর উপজেলার ইটবাড়িয়া ইউনিয়নের মো. জাফর ফকিরের ছেলে অটোরিকশা চালক মহিউদ্দিন ঈসাকে হত্যা করা হয়েছে। পরে একজোড়া সাদা জুতা আর সিসি টিভি ফুটেজে বেরিয়ে আসে মহিউদ্দীন ঈসা হত্যার গুরুত্বপূর্ণ ক্লু। পুলিশ সুপারের বুদ্ধিমত্তা তদন্তের ফলে অবশেষে গ্রেফতার হয় হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী মো. তুহিন (২২) ও নাহিদ (১৪)।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ২ টা ৩০ মিনিটের সময় পুলিশ কনফারেন্স রুমে প্রেস ব্রিফিং এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ। এ হত্যাকাণ্ড চাঞ্চল্যেকর সৃষ্টি হওয়ায় পুলিশ তদন্তে বেরিয়ে  আসে। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায় মহিউদ্দিন ঈসার অটোরিকশায় সাদা জুতা ব্যবহারকারীকে। এই জুতার সূত্র ধরে সত্যের সন্ধানের তদন্তে এগিয়ে যায় পুলিশ।

স্থানীয়দের সহযোগিতায় এমন জুতার সন্ধান মেলে বরগুনার আমতলী উপজেলার মহিষকাটা কালীবাড়ি গ্রামের নাহিদ (১৪) নামে এক কিশোরের পায়ে। তার নানা বাড়ি পটুয়াখালী সদরের ইটবাড়িয়া শরিক খালি গ্রামে। সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। তার স্বীকারোক্তি ও জবানবন্দির প্রেক্ষিতে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী মো. তুহিনকেও ঢাকার কাফরুল এলাকা থেকে  গ্রেফতার করা হয়।

জানা গেছে, গত ৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টার দিকে মহিউদ্দিন ঈসা তার অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। তখন পরিকল্পনা অনুযায়ী তুহিন ও নাহিদ ঈসাকে টিকটক ভিডিও বানানোর কথা বলে দশমিনা উপজেলার চাঁদপুরা গ্রামে তরমুজ খেতে নিয়ে যায়। বিভিন্ন কথা বলার মধ্যে হঠাৎ করে ঈসার কাছে ৩০০ টাকা দাবি করে তুহিন ও নাহিদ। ঈসা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে তুহিন ধারালো দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপ দেয় ঈসার শরীরে, আর নাহিদ ঈসার দুই পা চেপে ধরে রেখে জবাই করে। ঈসার মৃত্যু নিশ্চিত করে খড়কুটো দিয়ে মরদেহ ঢেকে রেখে, অটোরিকশাটি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু অটোরিকশাটির চাবি না পেয়ে পালিয়ে যায় তুহিন ও নাহিদ। এসময় ভিকটিমের মোবাইলফোনটি পুকুরে ফেলে দেয় ঘাতকরা।

ঘটনার পর নানা তথ্য সংগ্রহ এবং তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে সিসিটিভি ফুটেজ, সাদা জুতার সন্ধান ও স্থানীয় সূত্রের মাধ্যমে পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সনাক্ত করে। ১৫ ফেব্রুয়ারি মো. নাহিদকে গ্রেফতার করা হয় এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। সেই জবানবন্দির পর ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার কাফরুল এলাকা থেকে মো. তুহিনকে গ্রেফতার করা হয়। তুহিন আদালতে স্বীকার করেছেন যে, তারা অটো চুরি করার জন্য ঈসাকে হত্যা করেছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো দা, ঈসার মোবাইলফোন এবং রক্তমাখা জুতা উদ্ধার করা হয়েছে।

এই হত্যাকান্ডের আসামিদেরকে গ্রেপ্তার করার জন্য যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ।