ঢাকা ০৩:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যে বাজারে ঘন্টায় বিক্রি হয় দেড় লাখ টাকার লাউ!

মাইনুদ্দিন আল আতিক
  • আপডেটের সময় : ০৩:৫৮:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪
  • / ৭৭৭

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা বাজারে ১ ঘন্টায় ১লাখ ৫০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি হয়। যা স্থানীয় কৃষকরা তাদের নিজস্ব জমিতে  উৎপাদন করেন এবং এই বাজারে বিক্রি করেন। এতে এলাকার চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জায়গার পাইকাররা এসে এখান থেকে লাউ ক্রয় করে নিয়ে যান।

পাখিমারা বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্তুপে স্তুপে রাখা হয়েছে লাউ। এসব লাউ কুমিরমারা, আমিরাবাদ ও নাওভাঙ্গাসহ স্থানীয় গ্রাম থেকে আড়তে নিয়ে এসেছেন কৃষকরা। সেখান থেকে পাইকাররা যে যার মত ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে লাউ ভেদে ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে দাম ভালো পেয়ে বেশ খুশি স্থানীয় কৃষকরা। তুলনামূলক শ্রম ও ব্যয় কম হওয়ায় লাউ চাষে ঝুঁকছেন তারা। লাউসহ নতুন নতুন সবজি চাষে তাদেরকে আগ্রহী করে তুলতে পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।

জানা গেছে, সবজিখ্যাত গ্রাম কুমিরমারার প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ কৃষি কাজের সাথে সম্পৃক্ত। তাদের উৎপাদিত সবজি স্থানীয় বাজারে পাইকারি বিক্রি হয়। এখানের সবজির কদর এখন দেশজুড়ে। ফজরের পর পরই পাইকাররা আড়তে এসে হাজির হন। স্থানীয় কৃষকরা আড়তে সবজি নিয়ে এলেই শুরু হয় হাঁকডাক। ডাকের মাধ্যমে ১ থেকে দেড় ঘন্টায় শুধু লাউ বিক্রি হয় অন্তত দেড় লাখ টাকার।

লাউ চাষী মো. তাইয়্যেবুর রহমান বলেন, ‘আমি এ বছর লাউ উৎপাদনে ৩০ হাজার টাকা ব্যয় করেছি। আশা করছি আমার ২ লাখ টাকা আয় হবে। পরিশ্রম কম ও রোগবালাই কম হওয়ায় এবারে লাউ চাষ করেছি। প্রতিদিন সকালে গাছ থেকে লাউ কেটে আড়তে নিয়ে পাইকারি বিক্রি করি।’

কৃষক মো. জাকির বলেন, ‘আমরা সারাবছরই সবজি চাষে ব্যস্ত থাকি। অন্যান্য সবজির সাথে এ বছর হাইব্রিড ও দেশীয় গোল জাতের লাউ চাষ করেছি। লাউয়ের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিক্রি করে অধিক লাভবান হবো আশা করছি।’

পাখিমারা বাজারের ‘আল্লাহর দান’ সবজি আড়তের মালিক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘অন্যান্য সবজির চেয়ে এ বছর লাউয়ের ফলন ভালো। প্রতিদিন কৃষকরা তাদের উৎপাদিত সবজি বিক্রি করতে এখানে নিয়ে আসেন। আমরা তা কিনে রাখি এবং এখান থেকে দেশের বিভিন্নপ্রান্তের পাইকাররা কিনে নেন। এ বছর লাউয়ের উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং চাষীরা আশানুরূপ দাম পেয়ে খুবই খুশি।’

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আরাফাত হোসাইন বলেন, ‘অন্যান্য সবজির মধ্যে লাউ বেশ জনপ্রিয়। নীলগঞ্জ ইউনিয়নের উৎপাদিত সবজি জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের নানাপ্রান্তের চাহিদা মিটিয়ে থাকে। লাউ ছাড়াও এখানের নানা ধরনের সবজির চাহিদা এখন দেশজুড়ে। আশা করছি চাষীরা অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর বেশি লাভবান হবেন।’



নিউজটি শেয়ার করুন








যে বাজারে ঘন্টায় বিক্রি হয় দেড় লাখ টাকার লাউ!

আপডেটের সময় : ০৩:৫৮:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা বাজারে ১ ঘন্টায় ১লাখ ৫০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি হয়। যা স্থানীয় কৃষকরা তাদের নিজস্ব জমিতে  উৎপাদন করেন এবং এই বাজারে বিক্রি করেন। এতে এলাকার চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জায়গার পাইকাররা এসে এখান থেকে লাউ ক্রয় করে নিয়ে যান।

পাখিমারা বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্তুপে স্তুপে রাখা হয়েছে লাউ। এসব লাউ কুমিরমারা, আমিরাবাদ ও নাওভাঙ্গাসহ স্থানীয় গ্রাম থেকে আড়তে নিয়ে এসেছেন কৃষকরা। সেখান থেকে পাইকাররা যে যার মত ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে লাউ ভেদে ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে দাম ভালো পেয়ে বেশ খুশি স্থানীয় কৃষকরা। তুলনামূলক শ্রম ও ব্যয় কম হওয়ায় লাউ চাষে ঝুঁকছেন তারা। লাউসহ নতুন নতুন সবজি চাষে তাদেরকে আগ্রহী করে তুলতে পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।

জানা গেছে, সবজিখ্যাত গ্রাম কুমিরমারার প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ কৃষি কাজের সাথে সম্পৃক্ত। তাদের উৎপাদিত সবজি স্থানীয় বাজারে পাইকারি বিক্রি হয়। এখানের সবজির কদর এখন দেশজুড়ে। ফজরের পর পরই পাইকাররা আড়তে এসে হাজির হন। স্থানীয় কৃষকরা আড়তে সবজি নিয়ে এলেই শুরু হয় হাঁকডাক। ডাকের মাধ্যমে ১ থেকে দেড় ঘন্টায় শুধু লাউ বিক্রি হয় অন্তত দেড় লাখ টাকার।

লাউ চাষী মো. তাইয়্যেবুর রহমান বলেন, ‘আমি এ বছর লাউ উৎপাদনে ৩০ হাজার টাকা ব্যয় করেছি। আশা করছি আমার ২ লাখ টাকা আয় হবে। পরিশ্রম কম ও রোগবালাই কম হওয়ায় এবারে লাউ চাষ করেছি। প্রতিদিন সকালে গাছ থেকে লাউ কেটে আড়তে নিয়ে পাইকারি বিক্রি করি।’

কৃষক মো. জাকির বলেন, ‘আমরা সারাবছরই সবজি চাষে ব্যস্ত থাকি। অন্যান্য সবজির সাথে এ বছর হাইব্রিড ও দেশীয় গোল জাতের লাউ চাষ করেছি। লাউয়ের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিক্রি করে অধিক লাভবান হবো আশা করছি।’

পাখিমারা বাজারের ‘আল্লাহর দান’ সবজি আড়তের মালিক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘অন্যান্য সবজির চেয়ে এ বছর লাউয়ের ফলন ভালো। প্রতিদিন কৃষকরা তাদের উৎপাদিত সবজি বিক্রি করতে এখানে নিয়ে আসেন। আমরা তা কিনে রাখি এবং এখান থেকে দেশের বিভিন্নপ্রান্তের পাইকাররা কিনে নেন। এ বছর লাউয়ের উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং চাষীরা আশানুরূপ দাম পেয়ে খুবই খুশি।’

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আরাফাত হোসাইন বলেন, ‘অন্যান্য সবজির মধ্যে লাউ বেশ জনপ্রিয়। নীলগঞ্জ ইউনিয়নের উৎপাদিত সবজি জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের নানাপ্রান্তের চাহিদা মিটিয়ে থাকে। লাউ ছাড়াও এখানের নানা ধরনের সবজির চাহিদা এখন দেশজুড়ে। আশা করছি চাষীরা অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর বেশি লাভবান হবেন।’