ঢাকা ০৭:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কবিমন এবং কবিতা : বিশ্বজিৎ কুমার ধর

নিউজ রুম
  • আপডেটের সময় : ০২:২৯:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ জুলাই ২০২১
  • / ৭৮৩

কবিমন এবং কবিতা
বিশ্বজিৎ কুমার ধর

কবি হওয়ার অদম্য বাসনা মনে;
প্রতিদিন লেখার তাড়নায়
ডায়েরী খুলে, কলমটা হাতে নিয়ে
খোলা বাতায়ন পাশে বসি লিখতে।

শব্দ লেখার বর্ণগুলো আমার পাশেই
আমাকে ঘিরে পলান্তি পলান্তি খেলা করে।
শিশুসুলভ আচরণে বর্ণগুলো আমাকে
বলে,”তুমি চোখ বন্ধ করে আমাকে ধরো।”

অতপর কদাচিৎ খেলার ছলে
কখনো বা আমি তাদের ধরতে পাই,
আবার কখনো বা পাই না।

যখনই পাই একেবারে জাপটে ধরি;
আদরে চুমুতে ভরিয়ে দেই
যাতে আর হারিয়ে না যায়।

অথচ আবার কখনও আমার
কল্পনা থেকেও বর্ণগুলো
হারিয়ে যায় বহুদূর দিগন্তে।
তখন আমি হা-পিত্যেশ করে ফিরি,
কবিতা লেখার বর্ণগুলোকে ফিরে পাবার আশায়।

অপ্রিয় হলেও সত্য-
যখনই ফিরে পাই তাদের,
তারা থাকে অবিন্যস্ত,
এলোমেলো আর অগোছালো।

আমি স্থির মস্তিস্কে
অনেক ধৈর্য্য নিয়ে তাদের সুবিন্যস্ত করে মন মাতানো
শব্দ তৈরি করি।

এলোমেলো শব্দগুলো মিনতী জানায়,
“হে কবি,আমরাও সুবিন্যস্ত হতে চাই।”
অনুরোধ রক্ষায় শব্দগুলোকে
সযত্ন আদরে সাজাই।

সজ্জিত শব্দগুচ্ছ পরিপূর্ণতা পেয়ে
অন্যরূপ পরিগ্রহ করে
হয়ে যায় এক একটা বাক্য।
আসলে নিজ রূপে কেউ তৃপ্ত নয়-
তাই বাক্যালংকারে তৈরি হয় কবিতা।

একটি কবিতা শুধুই কবিতাই নয়-
এতে মিশে আছে কবির মনন,
এতে মিশে আছে কবির বিষয়জ্ঞান ও বিচক্ষণতা।
এতে মিশে আছে কবির অতীত ও বর্তমান সুখ-দু:খের স্মৃতি।

মিশে আছে কবির নিজ পরিবারসহ আত্মীয়-স্বজনের প্রতি উদাসীনতা,
আছে অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা।
তবুও সব ছাপিয়ে কবিতা লেখার পরিপূর্ণতার মাঝেই কবি খুঁজে পায় তার কবিস্বত্ত্বার স্বার্থকতা।

এক একটি কবিতা যেনো
এক একটি সন্তান।
সন্তানের মুখ দেখে যেমন
পিতা-মাতার চরম পরিতৃপ্তি,
তেমনি সদ্যোজাত সন্তানের মতো
স্বরচিত কবিতা দেখে
একজন কবির স্বর্গসুখ হয় প্রাপ্তি।



নিউজটি শেয়ার করুন








কবিমন এবং কবিতা : বিশ্বজিৎ কুমার ধর

আপডেটের সময় : ০২:২৯:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ জুলাই ২০২১

কবিমন এবং কবিতা
বিশ্বজিৎ কুমার ধর

কবি হওয়ার অদম্য বাসনা মনে;
প্রতিদিন লেখার তাড়নায়
ডায়েরী খুলে, কলমটা হাতে নিয়ে
খোলা বাতায়ন পাশে বসি লিখতে।

শব্দ লেখার বর্ণগুলো আমার পাশেই
আমাকে ঘিরে পলান্তি পলান্তি খেলা করে।
শিশুসুলভ আচরণে বর্ণগুলো আমাকে
বলে,”তুমি চোখ বন্ধ করে আমাকে ধরো।”

অতপর কদাচিৎ খেলার ছলে
কখনো বা আমি তাদের ধরতে পাই,
আবার কখনো বা পাই না।

যখনই পাই একেবারে জাপটে ধরি;
আদরে চুমুতে ভরিয়ে দেই
যাতে আর হারিয়ে না যায়।

অথচ আবার কখনও আমার
কল্পনা থেকেও বর্ণগুলো
হারিয়ে যায় বহুদূর দিগন্তে।
তখন আমি হা-পিত্যেশ করে ফিরি,
কবিতা লেখার বর্ণগুলোকে ফিরে পাবার আশায়।

অপ্রিয় হলেও সত্য-
যখনই ফিরে পাই তাদের,
তারা থাকে অবিন্যস্ত,
এলোমেলো আর অগোছালো।

আমি স্থির মস্তিস্কে
অনেক ধৈর্য্য নিয়ে তাদের সুবিন্যস্ত করে মন মাতানো
শব্দ তৈরি করি।

এলোমেলো শব্দগুলো মিনতী জানায়,
“হে কবি,আমরাও সুবিন্যস্ত হতে চাই।”
অনুরোধ রক্ষায় শব্দগুলোকে
সযত্ন আদরে সাজাই।

সজ্জিত শব্দগুচ্ছ পরিপূর্ণতা পেয়ে
অন্যরূপ পরিগ্রহ করে
হয়ে যায় এক একটা বাক্য।
আসলে নিজ রূপে কেউ তৃপ্ত নয়-
তাই বাক্যালংকারে তৈরি হয় কবিতা।

একটি কবিতা শুধুই কবিতাই নয়-
এতে মিশে আছে কবির মনন,
এতে মিশে আছে কবির বিষয়জ্ঞান ও বিচক্ষণতা।
এতে মিশে আছে কবির অতীত ও বর্তমান সুখ-দু:খের স্মৃতি।

মিশে আছে কবির নিজ পরিবারসহ আত্মীয়-স্বজনের প্রতি উদাসীনতা,
আছে অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা।
তবুও সব ছাপিয়ে কবিতা লেখার পরিপূর্ণতার মাঝেই কবি খুঁজে পায় তার কবিস্বত্ত্বার স্বার্থকতা।

এক একটি কবিতা যেনো
এক একটি সন্তান।
সন্তানের মুখ দেখে যেমন
পিতা-মাতার চরম পরিতৃপ্তি,
তেমনি সদ্যোজাত সন্তানের মতো
স্বরচিত কবিতা দেখে
একজন কবির স্বর্গসুখ হয় প্রাপ্তি।