নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘পাবনার রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজিব ওয়াজেদ জয় ও ববিসহ শেখ হাসিনা পরিবার ৫৮ হাজার কোটি টাকা চুরি করেছে। চুরি করা এই টাকা দিয়ে ৩টি পদ্মা সেতু করা যেত। খালেদা জিয়ার আমলে যখন পদ্মা সেতু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল তখন নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ৫ শত কোটি টাকা, কিন্তু সেই পদ্মা সেতুই নির্মাণ করা হয়েছে ৩২ হাজার কোটি টাকায়। হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি করেছে এই পদ্মা সেতু থেকে।’

বুধবার (৬ নভেম্বর) বিকালে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনা বলেছিল আমাকে ভোট দিলে ১০ টাকায় চাল খাওয়াবো, কিন্তু এখন ৭০ টাকা কেজি দরে চাল খাচ্ছি। যিনি কথা দিয়ে কথা রাখেননা, তিনি মোনাফিক। তিনি বিনামূল্যে সার দেওয়ার কথা ছিল, তাতো পেলোইনা উল্টো ১৪ শত টাকা দিয়ে ক্রয় করতে হয়।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় এ নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতারা কানাডায় বেগমপাড়া বানিয়েছে। দীর্ঘ ১৬টি বছর দেশের মানুষ ভোট দিতে পারে নাই। আওয়ামী লীগের আমলে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, আমাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিন। কিন্তু ২০১৪ সালে অটোপাশ ১৫১ টি আসন, ২০১৮ সালে শেখ হাসিনার আমলে রাতের ভোট এবং ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ এ এবং বি (স্বতন্ত্র) নাম দিয়ে তামাশার নির্বাচন করা হয়েছে। তারেক রহমান বলেছেন আমাকে ভোট দেওয়া দরকার নাই, আমি চাই বাংলাদেশের মানুষ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেবে এবং যে আন্দোলন শুরু হয়েছে আগামী দিনে একটি অবাধ, সুষ্ঠ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন বাংলাদেশে হবে। ব্যাংকগুলো আজ ফতুর হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাবেক ভূমিমন্ত্রীর লন্ডনে ২৫৫ টি বাড়ি পাওয়া গেছে। এস আলম গ্রুপ দেশ থেকে ১ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছে। অন্যায়ের কারণে ৫০০ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশ থেকে কোনো নেত্রী পালিয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের নেত্রীকে অন্যায়ভাবে দীর্ঘদিন কারাগারে রাখার পরেও পালিয়ে যায়নি।’

সবাইকে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া নেত্রীকে বাদ দিয়ে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী দলের পতাকা তলে সমবেত হয়ে ধানের শীষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

জনসভায় নীলগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. কামরুজ্জামান শহিদ মাতুব্বরের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাজী হুমায়ূন শিকদার, সিনিয়র সহ-সভাপতি জাফরুজ্জামান খোকন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান চুন্নু, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খন্দকার, কলাপাড়া পৌর বিএনপির সভাপতি গাজী মো. ফারুক, সাধারণ সম্পাদক মুসা তাওহীদ নান্নু মুন্সি, নীলগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সোহরাব হোসেন প্রমুখ।

এ সময় ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে পরিষদ মাঠ জনসমুদ্রে পরিণত হয়। নানা স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে সভাস্থল। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নীলগঞ্জ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আবুল হোসেন।