ঢাকা ০৭:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কলাপাড়ায় যত্রতত্র লাইসেন্সবিহিন করাত কল, নিরব ভূমিকায় কর্তৃপক্ষ

নিউজ রুম
  • আপডেটের সময় : ১২:২৩:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুন ২০২১
  • / ৬৮৪

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মহিপুর ও হাজিপুরে সংরক্ষিত বনের কোল ঘেষে একাধিক করাত কল স্থাপন করা হয়েছে।

করাত কলগুলো নির্মাণের ক্ষেত্রে নেই সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কোনো অনুমোদন। ফলে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে।

করাত কলে কাঠ জোগান দিতে গিয়ে উজাড় হচ্ছে বন বিভাগের গাছ। সরকারও বঞ্চিত হচ্ছে মোটা অংকের রাজস্ব থেকে।

বন ও পরিবেশ বিভাগের তদারকি ও যথাযথ পদক্ষেপের অভাবে অবৈধভাবেই হাজিপুর ও মহিপুরে সংরক্ষিত ফাতরা বনের পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে করাত কলগুলো।

মহিপুরের খাপড়াভাঙ্গা নদীর তীর এলাকায় এবং হাজিপুরের সোনাতলা নদীর তীরে এলাকার সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পাশেই করাত কলের অবস্থান।

সূত্র মতে, করাত কল স্থাপনের জন্য বন বিভাগের লাইসেন্স প্রাপ্তির পর নিতে হয় পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র। করাত কলের লাইসেন্স বিধিমালা ২০১২-র আইনে সুস্পষ্টভাবে বলা রয়েছে, করাত কল স্থাপন বা পরিচালনার জন্য লাইসেন্স ফি বাবদ ২০০০ টাকা ‘১/৪৫৩১/০০০০/২৬৮১ (বিবিধ রাজস্ব ও প্রাপ্তি)’ খাতে বাংলাদেশ ব্যাংক বা যেকোন সরকারি ট্রেজারিতে জমাপূর্বক উহার ট্রেজারি চালান আবেদনপত্রের সহিত সংযুক্ত না করলে আবেদনপত্র গ্রহণযোগ্য হবে না।

সরকারি অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিনোদন পার্ক, উদ্যান ও জনস্বাস্থ্য বা পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোনো স্থানের ২০০ মিটারের মধ্যে করাত কল স্থাপন করা যাবে না।

সকাল ৬টার আগে এবং সন্ধ্যা ৬টার পরে স’মিল চালানো যাবে না। বিধিমালায় আরো বলা আছে, এ আইন কার্যকর হওয়ার আগে কোনো নিষিদ্ধ স্থানে করাত কল স্থাপন করা হয়ে থাকলে আইন কার্যকর হওয়ার তারিখ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে সেগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। যদি তা না করা হয় তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তা বন্ধের জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।

অথচ আলিপুর, হাজিপুর ও মহিপুরে কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অবৈধ করাত কল।

বন ও পরিবেশ বিভাগের তদারকি ও যথাযথ পদক্ষেপের অভাবে এ সংকট সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

করাত কলের মালিক বুলেট হাওলাদার বলেন, এলাকার জনসাধারণ উপকারের স্বার্থে করাত কলের স্থাপন করা হয়েছে।

মহিপুরের করাত কল পরিচালনার অনুমতি আছে কিনা তা জানার জন্য মালিক মহিপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক আকনের ছেলে সোহাগ আকনকে একাধিক বার ফোন দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

কলাপাড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ আবদুস ছালাম বলেন, করাত কলের নির্মাণে অনুমতির জন্য আমার কাছে কোন লিখিত আবেদন দেয়নি। চলমান লকডাউনের সুযোগ নিয়ে মিলগুলো স্থাপন করা হচ্ছে। আমি খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

মহিপুরের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালাম আজাদ জানান, করাত কলের নির্মাণের তাদের কোনো আনুমতি না থাকায় মালিকের কল বন্দ রাখতে বললে আমাদের নির্দেশ উপেক্ষা করে গায়ের জোরে করাত কল পরিচালনা করছে। তাদের বিরুদ্ধে বনবিভাগের নীতিমালা অনুসারে শীঘ্রই আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

পটুয়াখালী জেলা সহকারী বন কর্মকর্তা মো.তরিকূল ইসলাম জানান, বন বিভাগের নীতিমালা অনুসারে শীঘ্রই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।



নিউজটি শেয়ার করুন








কলাপাড়ায় যত্রতত্র লাইসেন্সবিহিন করাত কল, নিরব ভূমিকায় কর্তৃপক্ষ

আপডেটের সময় : ১২:২৩:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুন ২০২১

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মহিপুর ও হাজিপুরে সংরক্ষিত বনের কোল ঘেষে একাধিক করাত কল স্থাপন করা হয়েছে।

করাত কলগুলো নির্মাণের ক্ষেত্রে নেই সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কোনো অনুমোদন। ফলে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে।

করাত কলে কাঠ জোগান দিতে গিয়ে উজাড় হচ্ছে বন বিভাগের গাছ। সরকারও বঞ্চিত হচ্ছে মোটা অংকের রাজস্ব থেকে।

বন ও পরিবেশ বিভাগের তদারকি ও যথাযথ পদক্ষেপের অভাবে অবৈধভাবেই হাজিপুর ও মহিপুরে সংরক্ষিত ফাতরা বনের পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে করাত কলগুলো।

মহিপুরের খাপড়াভাঙ্গা নদীর তীর এলাকায় এবং হাজিপুরের সোনাতলা নদীর তীরে এলাকার সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পাশেই করাত কলের অবস্থান।

সূত্র মতে, করাত কল স্থাপনের জন্য বন বিভাগের লাইসেন্স প্রাপ্তির পর নিতে হয় পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র। করাত কলের লাইসেন্স বিধিমালা ২০১২-র আইনে সুস্পষ্টভাবে বলা রয়েছে, করাত কল স্থাপন বা পরিচালনার জন্য লাইসেন্স ফি বাবদ ২০০০ টাকা ‘১/৪৫৩১/০০০০/২৬৮১ (বিবিধ রাজস্ব ও প্রাপ্তি)’ খাতে বাংলাদেশ ব্যাংক বা যেকোন সরকারি ট্রেজারিতে জমাপূর্বক উহার ট্রেজারি চালান আবেদনপত্রের সহিত সংযুক্ত না করলে আবেদনপত্র গ্রহণযোগ্য হবে না।

সরকারি অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিনোদন পার্ক, উদ্যান ও জনস্বাস্থ্য বা পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোনো স্থানের ২০০ মিটারের মধ্যে করাত কল স্থাপন করা যাবে না।

সকাল ৬টার আগে এবং সন্ধ্যা ৬টার পরে স’মিল চালানো যাবে না। বিধিমালায় আরো বলা আছে, এ আইন কার্যকর হওয়ার আগে কোনো নিষিদ্ধ স্থানে করাত কল স্থাপন করা হয়ে থাকলে আইন কার্যকর হওয়ার তারিখ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে সেগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। যদি তা না করা হয় তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তা বন্ধের জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।

অথচ আলিপুর, হাজিপুর ও মহিপুরে কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অবৈধ করাত কল।

বন ও পরিবেশ বিভাগের তদারকি ও যথাযথ পদক্ষেপের অভাবে এ সংকট সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

করাত কলের মালিক বুলেট হাওলাদার বলেন, এলাকার জনসাধারণ উপকারের স্বার্থে করাত কলের স্থাপন করা হয়েছে।

মহিপুরের করাত কল পরিচালনার অনুমতি আছে কিনা তা জানার জন্য মালিক মহিপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক আকনের ছেলে সোহাগ আকনকে একাধিক বার ফোন দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

কলাপাড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ আবদুস ছালাম বলেন, করাত কলের নির্মাণে অনুমতির জন্য আমার কাছে কোন লিখিত আবেদন দেয়নি। চলমান লকডাউনের সুযোগ নিয়ে মিলগুলো স্থাপন করা হচ্ছে। আমি খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

মহিপুরের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালাম আজাদ জানান, করাত কলের নির্মাণের তাদের কোনো আনুমতি না থাকায় মালিকের কল বন্দ রাখতে বললে আমাদের নির্দেশ উপেক্ষা করে গায়ের জোরে করাত কল পরিচালনা করছে। তাদের বিরুদ্ধে বনবিভাগের নীতিমালা অনুসারে শীঘ্রই আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

পটুয়াখালী জেলা সহকারী বন কর্মকর্তা মো.তরিকূল ইসলাম জানান, বন বিভাগের নীতিমালা অনুসারে শীঘ্রই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।