সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়ন ফরম কিনলেন সরিষাবাড়ীর জহুরা লতীফ

- আপডেটের সময় : ০৭:১৪:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
- / ৬২০
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনলেন সরিষাবাড়ী উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বেগম জোহরা লতীফ।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১ টার দিকে রাজধানীর গুলিস্তানের ২৩, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বেগম জোহরা লতীফ তার স্বামীকে নিয়ে এ ফরম জমা দেন।
তার স্বামী সরিষাবাড়ী থানা আওয়ামীলীগের ১৯৬৮ সালের প্রতিষ্ঠাকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক, বর্তমান সহ-সভাপতি, সাবেক দু’বারের ইউনিয়ন পরিষদের সফল ও স্বনামধন্য চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ এম এ লতিফ।
ফরম জমা দিয়ে বেগম জোহরা লতীফ বলেন, “আমি বীর মুক্তিযোদ্ধার সহধর্মিণী। আমার স্বামী দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এই দেশকে স্বাধীন করেছেন। আমি নিজেও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত। বিগত দিনে বিরোধী দলের আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধেও সক্রিয়ভাবে মাঠে ছিলাম। তিনি আরো বলেন, আমি উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে সরিষাবাড়ী উপজেলা ও মহাদান ইউনিয়নবাসির খেদমত ও ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। সবসময় অসহায় মানুষের পাশে ছিলাম তারাই আমাকে সংরক্ষিত মহিলা আসনে এমপি হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করার জন্য অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। সকল দিক বিবেচনা করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা যদি আমাকে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হিসাবে মনোনয়ন দেয়, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর একজন ভ্যানগার্ড হিসেবে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাবো। তিনি আরো বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীর কথা অনুসারে কাজ করতে চাই।” এছাড়াও নারীদের জন্য কাজ করতে চান বলে জানান তিনি।
বেগম জহুরা লতীফ ১৯৭৭/৭৮ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ যোগদানের মাধ্যমে আওয়ামী রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। তিনি জামালপুর জেলা শাখার মহিলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক একাডেমি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি। সরিষাবাড়ী উপজেলা শাখার সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রতিটি শাখায় নেতৃত্ব দানকারী এই মহীয়সী নারী ২০১৭ হাল হইতে অদ্যবতী পর্যন্ত সরিষাবাড়ী উপজেলা বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন সুনাম ও দক্ষতার সাথে। তিনি ১৯৯২ সাল মহাদান ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক নির্বাচিত চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে দায়িত্ব পালনে সততা, ন্যায়নিষ্ঠা ও যোগ্যতা এবং মানুষের কল্যাণে কাজ করায় ১৯৯৭ সালে শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান হিসেবে স্বর্ণপদক অর্জন করেন। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সরিষাবাড়ী উপজেলা পরিষদের দুই মেয়াদে উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তার স্বামী বরেণ্য রাজনীতিবিদ, বীরমুক্তিযোদ্ধা এম এ লতীফ বলেন,“আমি বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। ভারতের সামরিক একাডেমির মাধ্যমে মুজিব বাহিনীর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি এবং ১১ নং সেক্টর বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করি। সেক্টর কমান্ডারের আমাকে দেওয়া অনেক সার্টিফিকেট রয়েছে আমার। ৭৫- এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রতিবাদে রাজপথে সক্রিয় ছিলাম। পরবর্তীতে পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করে ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখেন। তখন আমার গ্রেফতারের সংবাদ শুনে আমার বাবা হার্টফেল করে মারা যান। তিনি আরো বলেন, আমি সাবেক মহামান্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও তোফায়েল আহমেদ ভাইয়ের সাথে একই কারাগারে দীর্ঘ সাড়ে ২২ মাস জেল খেটেছি। পরবর্তীতে হাইকোর্টের রিটের মাধ্যমে মুক্তি পেয়ে পুনরায় আমার প্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে মাঠে কাজ করি। তিনি আরো বলেন, আমি ১৯৬৮ সালে সরিষাবাড়ী থানা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করি। তিনি বলেন, ১৯৬৮ থেকে ৫০ বছর জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি এবং সরিষাবাড়ী আলহাজ্ব জুট মিল এবং সরিষাবাড়ী ২৩ টি বেলিং প্রেস এর ৫০ হাজার শ্রমিকের বেসিক ইউনিয়নের রেজিস্ট্রেশন এবং সিবিএ এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। গত দুই মেয়াদে আমি সহ-সভাপতি সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে
মাঠে কাজ করছি, এখনো এই বয়সেও আছি। থাকবো আমরণ। তাই বিগত দিনের কর্মনিষ্ঠতায় যদি নেত্রী মনে করেন তাহলে ইনশাআল্লাহ আমার সহধর্মিণী মনোনয়ন পাবেন।”
উল্লেখ্য, জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা ৫০টি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচিত ৬২ জন সংসদ সদস্য তাদের পক্ষ থেকে সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য নির্বাচনের ক্ষমতা আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়েছেন। ফলে আওয়ামী লীগ নিজ দলের এবং স্বতন্ত্রদের মিলে মোট ৪৮ জন সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য দিতে পারবে। বাকি দুটি আসনে নারী সংসদ সদস্য দিতে পারবে জাতীয় পার্টি (জাপা)।