লোডশেডিং ও গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন, সোলার ও চার্জার ফ্যান কেনার হিড়িক!

- আপডেটের সময় : ১২:১১:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ জুন ২০২৩
- / ৬১০
মাইনুল ইসলাম রাজু, আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ বরগুনার আমতলী ও তালতলী উপজেলায় এক ঘণ্টা পরপর বিদ্যুতের লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে। ও গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপদাহের কারনে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। ওই দু’উপজেলায় রাত আর দিন নেই সমানতালে চলছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। বিশেষ করে দু’উপজেলার শহর এলাকায় কিছুটা বিদ্যুৎ পেলেও প্রত্যন্ত এলাকায় দিনের অধিকাংশ সময় ও রাতে বিদ্যুৎ থাকে না বললেই চলে। ফলে প্রচন্ড গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে মানুষের জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। ফলে একটু প্রশান্তির জন্য ব্যাটারী চালিত সোলার ও চার্জার ফ্যান কেনার জন্য ইলেক্ট্রনিকস দোকানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ক্রেতারা।
গত কয়েক দিন যাবত গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপদাহ ও বিদ্যুতের এই ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে হিমশিম খাচ্ছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ বিদ্যুৎনির্ভর প্রতিষ্ঠানগুলো।
পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন আমতলী জোনাল অফিস সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে আমতলী উপজেলার ৬২ হাজার জন গ্রাহক সংখ্যার বিপরীতে বিদ্যুৎ এর চাহিদা রয়েছে ১২ মেগাওয়াট। কিন্তু সে তুলনায় তারা বরাদ্দ পাচ্ছে মাত্র ৬ থেকে ৭ মেগাওয়াট। একই সমিতির আওতায় তালতলী উপজেলায় ৩৩ হাজার জন গ্রাহক সংখ্যার বিপরীতে বিদ্যুৎ এর চাহিদা রয়েছে সাড়ে ৫ মেগাওয়াট। কিন্তু সে তুলনায় তারা বরাদ্দ পায় মাত্র ২ মেগাওয়াট।
সরেজমিন দেখা যায়, দু’উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুতের অব্যাহত লোডশেডিংয়ের কারণে স্থানীয় এজেন্ট ব্যাংক, এনজিও অফিস, ফটোকপি ও সাইবার ক্যাফেগুলোর কার্যক্রম প্রায়ই বন্ধ থাকছে। এতে করে শহর ও গ্রামীণ জনপদের লোকজন তাদের আর্থিক লেনদেনসহ অতি প্রয়োজনীয় কাজে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে।
এদিকে আজ মঙ্গলবার আমতলী পৌর শহরের বিভিন্ন ইলেট্রনিক্স পণ্যের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি দোকানে ব্যাটারি চালিত ও সোলার সিস্টেমের ফ্যান ক্রয়ে ক্রেতাদের প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
আমতলী পৌর শহরের ইলেকট্রিক পণ্য ব্যবসায়ী সাদিয়া ইলেট্রনিক্স এর মালিক মোঃ ইলিয়াস মিয়া বলেন, প্রচন্ড গরম ও তাপদাহে মানুষ টিকতে পারছে না। ফলে একটু প্রশান্তি পেতে বিদ্যুৎবিহীন ব্যাটারি চালিত চার্জার ফ্যান ও সোলার সিস্টেমের ফ্যান ক্রয় করছেন। বিগত দিনে এক সপ্তাহে যে পরিমাণ চার্জার ও সোলার ফ্যান বিক্রয় করতাম তা এখন একদিনে বিক্রি করছি।
আমতলী পৌর শহরের একটি ইলেকট্রিক্সে পণ্যের দোকানে ব্যাটারি চালিত চার্জার ফ্যান কিনতে আসা গৃহবধূ শাহিনুর বেগম বলেন, প্রচন্ড গরমে টিকতে না পেরে ব্যাটারী চালিত একটি মাঝারী চার্জার ফ্যান তিনি ৪ হাজার ৪০০ টাকায় ক্রয় করেছেন।
আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মোঃ শাহিন হাওলাদার বলেন, দিন- রাত মিলিয়ে আমাদের গ্রামে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টার বেশী বিদ্যুৎ থাকছে না। ফলে ফ্রিজে রাখা বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের বিষয়ে পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধিন আমতলী জোনাল অফিসের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ জিয়া উদ্দিন তরফদার বলেন, চাহিদার তুলনায় বিদ্যুতের বরাদ্দ কম থাকায় সারাদেশের মতো আমতলীতেও ব্যাপক লোডশেডিং হচ্ছে।